সিনেমাপ্রেমী মানুষদের কাছে নায়ক নায়িকার মতই সমান জনপ্রিয়তা পেয়ে থাকেন নেগেটিভ চরিত্রের নায়ক নায়িকারা। বাংলা সিনেমা জগতের এমনই একজন জনপ্রিয় খলনায়িকা হলেন সংঘমিত্রা ব্যানার্জি (Sanghamitra Banerjee)। নিজের অভিনয় প্রতিভা দিয়ে দিনের পর দিন দর্শকদের মনোরঞ্জন করেছেন তিনি। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে বড়পর্দার খলনায়িকা (Villain) হিসেবে দাপটের সাথে অভিনয় করেছেন তিনি। আজ বং ট্রেন্ডের পাতায় থাকছে এই জনপ্রিয় খলনায়িকার বাস্তব জীবনের নানান অজানা দিক।
আসলে টিভির পর্দায় দেখা চরিত্রদের সাথে দর্শকরা এতটাই একাত্ম হয়ে পড়েন যে ওই চরিত্রের অভিনেতা অভিনেত্রীদেরও বাস্তব জীবনে ওই চরিত্রের মতোই ভেবে বসেন। তা সে নায়িকা হোক কিংবা খলনায়িকা,উভয়ের ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য। ব্যাতিক্রম নন বাংলার এই জনপ্রিয় খলনায়িকা সংঘমিত্রা ব্যানার্জিও। একটা সময় এমন ছিল যখন দর্শকদের সামনে তার উচ্চমানের অভিনয় রীতিমতো রাগ ধরাতো দর্শকদের মনে। কিন্তু সবটাই ছিল চরিত্রের খাতিরে করা অভিনয়।তবে বাস্তব জীবনে তিনি ছিলেন একেবারে অন্য মানুষ।
কারণ বাস্তব জীবনে তিনি ছিলেন একজন রসিক মানুষ ছিলেন। তাই সবসময় হাসি মজা করতে ভালোবাসতেন তিনি। এমনকি নিজের কাউন্সেলিং নিজেই করতেন তিনি।পরবর্তীতে খলনায়িকা হিসাবে তুমুল জনপ্রিয়তা পেলেও সংঘমিত্রা ব্যানার্জি ছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের একজন মেধাবী ছাত্রী। বেনারসে ১৯৫৬ সালের ৮ই আগস্ট তার জন্ম হয়েছিল। তার বাবা সুভাষ কুমার মুখার্জ্জী এবং মা সান্ত্বনা মুখার্জ্জী। তিনি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন মেয়েরা যে ছেলেদের থেকে কোনো অংশেই পিছিয়ে নয় সেই কথাই প্রমাণ করবেন তিনি।
আর তাই মন দিয়ে পড়াশুনা করে প্রথমে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে সংস্কৃত অনার্স পড়েছিলেন তিনি। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করেছিলেন। এছাড়া তিনি বাংলা সাহিত্যে স্পেশাল ডিপ্লোমা অর্জন করেছিলেন। শুধু তাই নয় শাস্ত্রীয় নৃত্য ও কথ্যকের জন্য তালিমও নিয়েছিলেন তিনি। ১৯৮১ সালে ভারতীয় সংস্কৃতির ডেলিগেট হয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পরবর্তীতে টোকিওতে ক্লাসিকাল ডান্সের ডিপ্লোমা অর্জন করেন তিনি।
এরপর কলঙ্কিনী কঙ্কাবতীর অডিশনে উত্তম কুমারকে দেখতে গিয়ে তাঁরই নজরে পড়ে যান সংঘমিত্রা। কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী ছবির হাত ধরেই অভিনয় জগতে পা রেখেছিলেন এই অভিনেত্রী। এলাহাবাদের জয়ন্ত ব্যানার্জির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তার। তবে শুধু অভিনয় নয় পাশাপাশি রান্নাবান্না করতে পছন্দ করতেন তিনি। পাশাপাশি সমাজসেবাও করতেন তিনি। একাধিক মানুষকে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছেন তিনি বহু ক্ষেত্রে। শেষ বয়সে মারণ রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৬ সালে প্রয়াত হয়েছেন তিনি।