গত রবিবার গরফা এলাকায় উদ্ধার হয় ‘আমি সিরাজের বেগম’ খ্যাত অভিনেত্রী পল্লবী দে’র (Pallabi Dey) ঝুলন্ত দেহ। ওই আবাসনেই মৃতার সাথে লিভ ইন করতেন তার প্রেমিক সাগ্নিক চক্রবর্তী। অভিনেত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই তাই তার দিকে উঠছে একের পর এক অভিযোগের আঙুল। অবসাদ নাকি খুন? কী কারণে চির অন্ধকার ঘনাল বছর পঁচিশের এই উঠতি অভিনেত্রীর জীবনে? এই প্রশ্নই দানা বাঁধছে টলিপাড়ার আনাচে-কানাচে।
দেখে আত্মহত্যা মনে হলেও তা একেবারেই মানতে নারাজ অভিনেত্রীর পরিবার। স্বভাবে শান্ত মিষ্টি এই মেয়ে যে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তা ঘুনাক্ষরেও ভাবতে পারেনি কেউ। এদিকে, রবিবার পল্লবীর (Pallabi Dey) মৃত্যুর পর থেকে লাগাতার পুলিশি জেরার মুখে পড়েছেন, অভিনেত্রীর ‘প্রেমিক’ সাগ্নিক চক্রবর্তী (Sagnik Chakraborty)। কখনও পড়েছেন ভেঙে, কখনও তার মুখ থেকে উঠে আসা তথ্যতেই বেড়েছে রহস্যের পারদ৷
সাগ্নিকের দাবি, ঋণে জর্জরিত হয়ে অবসাদের কারণের আত্মহত্যার পথে হেঁটেছিলেন পল্লবী। কিন্তু মৃত অভিনেত্রীর বাবা নীলু দে’র দাবি, আত্মহত্যা নয় নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে তাঁর মেয়েকে৷ পাশাপাশি পল্লবীর টাকা সম্পত্তি নয় ছয়ের দাবিও ওঠে সাগ্নিকের বিরুদ্ধে। সাগ্নিকের দামি অডি, নিউটাউনে ৮০ লাখের ফ্ল্যাট, ২ লাখের ল্যাপটপ এই সবই নাকি পল্লবীর দেওয়া৷
এদিকে সাগ্নিকের মাসিক আয় মাত্র ২০ হাজার টাকা। তা দিয়ে এত বিলাসবহুল জীবনযাপন করা যায় কিনা প্রশ্ন উঠছিল বিভিন্ন মহলে। পল্লবীর বাবার দাবি এসব তার মেয়েই কিনে দিয়েছিল সাগ্নিককে। এছাড়াও সাগ্নিকের আরও একটি বিয়ে ছিল, তার কারণেই আত্মহত্যা করেছিল সাগ্নিকের পুরোনো আরেক প্রেমিকা।
সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই গরফা থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে সাগ্নিককে। এবার মুখ খুললেন অভিযুক্ত সাগ্নিক চক্রবর্তীর মা সন্ধ্যা চক্রবর্তী। তার দাবি সাগ্নিককে অডি কেনার সময় ৯ লাখ টাকা দিয়েছিলেন তিনিই। সেই গাড়ি এখন ব্যবহার করছেন সাগ্নিকের পরিবার৷ তিনি আরও জানান রাজারহাটে যে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনার প্রসঙ্গ উঠে আসছে সেটিতেও আমরা সাগ্নিককে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছি।
নগদ ৪০ লাখ এবং লোন দিয়েই নাকি ওই ফ্ল্যাট কিনেছিলেন সাগ্নিক৷ তার কাগজপত্র ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতে জমা পড়েছে বলে খবর। জয়েন্ট ফিক্সড অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে দুজনের নামে। অভিযুক্তর মায়ের আরও দাবি, ঐন্দ্রিলার সাথে ছেলের কোনোওরকম সম্পর্কই ছিলনা। বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ৷ আগামী ২৬ শে মে পর্যন্ত সাগ্নিককে পুলিশ কাস্টডিতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে বিচারক।