
টানা ১৮ দিন ধরে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma)। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনার পাশাপাশি সকলে বলছেন ‘ফাইট ঐন্দ্রিলা ফাইট। তিন দিন আগেই সকালে আচমকা পরপর ২ বার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল অভিনেত্রীর। যা নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়ে দেয় চিকিৎসকদের। এরইমধ্যে বৃহস্পতিবার রাতেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয় ঐন্দ্রিলার হেল্থ আপডেট।
যা শোনার পর অনুরাগীদের দুশ্চিন্তা যায় আরও বেড়ে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায় , ঐন্দ্রিলার শরীর সম্পূর্ণ অসাড়। তাঁর মুখেরও কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাতেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ছড়িয়ে পরে ভুয়ো খবর। সেই খবরের সত্যতা যাচাই না করেই অভিনেত্রীর অনেক সহকর্মী থেকে অনুরাগী RIP লিখে শেয়ার করতে শুরু করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। যার জেরে বাধ্য হয়ে ওইদিন মধ্য রাতেই সব্যসাচী পোস্ট করেছিলেন, ‘আরেকটু থাকতে দাও ওকে..’।
এরইমধ্যে শুক্রবার মাঝরাতেই দীর্ঘ একটি ফেসবুক পোস্টে ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থার উন্নতির কথা জানালেন সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury)। সেইসাথে এদিন তিনি মুখ খুলেছিলেন বিগত কয়েকদিনে ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে তৈরি হওয়া নানা বিতর্ক নিয়েও। এদিন ফেসবুক পোস্টের (Facebook Post) শুরুতেই সব্যসাচী লিখেছেন ‘কয়েক হাজার মানুষের নিঃস্বার্থ ভালোবাসার জন্য এতখানি লেখা প্রয়োজন ছিল’।
এরপরেই বুধবার সকালে ঐন্দ্রিলার হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়ে সব্যসাচী লিখেছেন ‘পরশুদিন সকালে ঐন্দ্রিলার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়, চোখের সামনে দেখলাম ওর হার্টরেট ড্রপ করে চল্লিশের নিচে নেমে তলিয়ে গেলো, মনিটরে ব্ল্যাঙ্ক লাইন, কান্নার আওয়াজ, তার মাঝে ডাক্তাররা দৌড়াদৌড়ি করছেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে হৃদস্পন্দন ফের ফিরে এলো বিভিন্ন সাপোর্টে, হার্টবিট ১২০’। এরপর অন্য হাসপাতালের এক নামকরা নিউরোসার্জন ঐন্দ্রিলাকে দেখে নাকি জানিয়েছিলেন “ও চলে গেছে অনেক আগেই, শুধুশুধু এইভাবে আটকে রাখছেন কেন? এমনিতেও কালকের মধ্যে সব থেমেই যাবে। লেট্ হার গো পিসফুলি”
কিন্তু সব্যসাচীর কথায় ‘ছাড়তে কি আর পারি, মায়ার টান বড় কঠিন’। তাই কদিন আগেই যে সব্যসাচী মিরাকলের জন্য প্রার্থনা করতে বলেছিলেন এদিন তিনিই ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থার উন্নতির কথা জানিয়ে লিখেছেন ‘কে বলে মিরাকেল হয় না? কে বলে ও চলে গেছে? এক প্রকার অনন্ত শূন্য থেকে এক ধাক্কায় ছিটকে ফিরে এলো মেয়েটা। গেছে বললেই ও যাবে না কি, যেতে দিলে তো যাবে’। এরপরেই ঈশ্বর-এর ফেসবুক করার প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি লিখেছেন ‘ঈশ্বর ফেসবুক করেন না আমি জানি, তাই লিখেছিলাম মন থেকে প্রার্থনা করুন, ‘ফোন’ থেকে করুন লিখিনি। তবে পর পর তিনজন নিউরোসার্জন যদি বলেন ‘ঈশ্বরকে ডাকুন’, তাহলে আর না ডেকে উপায় কি?’
সেইসাথে এদিন সব্যসাচী বলেছেন ‘ঐন্দ্রিলাসর চিকিৎসার খরচ নিয়ে লেখালিখি বন্ধ করা উচিত, পরিবারের সামর্থ্য অনুযায়ীই চিকিৎসা হবে, এখনো অবধি কারোর কাছে এক পয়সাও অর্থসাহায্য চাওয়া হয়নি অথবা কারোর থেকে এক পয়সাও গ্রহণ করা হয়নি’।সব্যসাচীর লেখার শেষে এসেছে শকুনের প্রসঙ্গ। এদিন অভিনেতা লিখেছেন ‘মানুষের গায়ে আজকাল বড়ই শকুন শকুন গন্ধ পাই। গত দুইদিন ধরে হাসপাতালের নিচে বেশ ভিড় জমেছিলো, ওর অবস্থার উন্নতি ঘটাতে কাল রাত থেকে একেবারে খাঁ খাঁ করছে’। সবশেষে বামাক্ষ্যাপার কথায় অভিনেতা লিখেছেন ‘ঐন্দ্রিলা আছে। ঐন্দ্রিলা থাকবে।রাখে বড়মা, তো মারে কোন..’।