গতকালকেই শেষ হয়েছে ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’ ধারাবাহিকের দীর্ঘদিনের পথ চলা। টিভির পর্দায় শেষ হয়েছে অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরীর দীর্ঘ তিন বছরের সফর। সিরিয়াল প্রেমীদের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল মা তারার বরপুত্র বামাক্ষ্যাপার চরিত্রে সব্যসাচীর অভিনয়। এমনকি একটা সময় এমন ছিল যখন ভক্তরা তাকে সব্যসাচী কম বামদেব নামেই বেশী চিনতেন। এদিন ধারাবাহিকের শেষ পর্ব সম্প্রচার হওয়ার পরেই মন খারাপ গ্রাস করেছে ভক্তদের, পাশাপাশি, পর্দার বামার ও মন ভারাক্রান্ত।
সময়টা নেহাৎ কম নয় দীর্ঘ ৩ তিনটে বছর। বামার দেহে নিজেকে ধারণ করেছিলেন সব্যসাচী। শেষ দিকে যদিও TRP লিস্টে বেশ পিছিয়ে পড়েছিল এই ধারাবাহিক, স্লট ও বদলেছে কয়েকবার। তারপর আচমকা বন্ধই করে দিতে হল ধারাবাহিক। তাই শেষ বেলায় সব্যসাচীর গলায় বেশ কিছুটা অভিমানের সুর ধরা পড়েছে।
আর বামা সাজতে হবেনা সব্যসাচীকে, নেই কলটাইমের তাড়াও৷ সারা ধারাবাহিক জুড়ে মা তারাই ছিল তার একমাত্র সঙ্গী। মাকে জড়িয়ে ধরে, এদিন একটি আবেগঘন পোস্ট শেয়ার করেন সব্যসাচী। দীর্ঘ পোস্টে তিনি লিখলেন,” এযাবৎ কত সিরিয়াল যে শুরু হয়েছে আর কতই যে শেষ হয়েছে, তা খোদাই জানেন। ২০১৫ সাল থেকে আমার নিয়মিত স্টুডিওপাড়ায় যাতায়াত, টালিগঞ্জ মোড়ের মাথায় যে আমি আজ অবধি কতগুলো ধারাবাহিকের হোর্ডিং পাল্টাতে দেখেছি তা নিজেই গুনে শেষ করতে পারবো না। আসলে সময়ের সাথে হোর্ডিং পাল্টায়, মুখ এক থাকলেও পরিচয় পাল্টায়, পুরোনো পোস্টার ছিঁড়ে নামিয়ে নতুন পোস্টার সাঁটা হয়। নারকেল ফাটিয়ে, ক্যামেরা পুজো করে যে কাজ শুরু হয়, সময়ের সাথে সবাই তা ভুলেও যায়। এটাই বাস্তব, এটাই জীবন। ”
তিনি আরও জানান, “আমার মনের কোণেও একটা হযবরল দেওয়াল আছে, নিয়মিত পোস্টার চিপকাই, হোর্ডিং টাঙ্গাই। সিনেমা, ছবি, গান, গল্প, চরিত্র। যেটা যখন পছন্দ। কিছুদিন জ্বলজ্বল করে, সময়ের সাথে পুরোনো একঘেয়ে হয়ে গেলেই, টান মেরে ছিঁড়ে দিই। তবে এই ছবিটা থাকবে, চিরকাল থাকবে।
গতকাল অন্তিম পর্ব দেখে আমায় অনেকেই মেসেজ করেছেন, ধন্যবাদও জানিয়েছেন। আমি অবশ্য তাতে একটু অবাকই হয়েছি, সকাল এগারোটায় এতজন যে দেখবে ভাবতে পারিনি। তবে শেষ দিনে অকপটে স্বীকার করতেই পারি, ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’ ছিল আমাদের পরিচালক শুভেন্দু এবং সৃজন পরিচালক নৈঋতার মানসপুত্র। তিন বছর ধরে ওরাই সিরিয়ালটিকে সযত্নে লালন করেছে। ধন্যবাদটুকু ওদেরই প্রাপ্য। আমি বরাবরের মতই, নিমিত্ত মাত্র।”