স্টার জলসার (Star Jalsha) পর্দায় সম্প্রচারিত জনপ্রিয় বাংলা সিরিয়াল (Bengali Serial) ‘মেয়েবেলা’ (Meyebela) থেকে সরে এসেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী রূপা গাঙ্গুলী (Roopa Ganguly)। প্রসঙ্গত এই সিরিয়ালের হাত ধরেই দীর্ঘ আট বছর পর টেলিভিশনের পর্দায় কামব্যাক করেছিলেন পর্দার দ্রৌপদী। কিন্তু চার মাসের মধ্যেই তিনি নিজে থেকে সরে দাঁড়ালেন এই সিরিয়ালে থেকে।
চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকেই ধারাবাহিকে তাঁর অভিনীত বিথীকা মিত্রের চরিত্রে দেখা যাচ্ছে অভিনেত্রী অনুশ্রী দাসকে। আর এতেই চটেছেন দর্শকদের একটা বড় অংশ। বিথী মাসির চরিত্রে রূপা গাঙ্গুলির পরিবর্তে অন্য কাউকে মানতে পারছেন না দর্শকরা। অনেকে তো এখনও পর্যন্ত বিশ্বাসই করছেন না, রূপা গাঙ্গুলী আর এই সিরিয়ালে অভিনয় করবেন না।
ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘোরাফেরা করছে রূপা গাঙ্গুলির মেয়েবেলা ছাড়ার একাধিক কারণ। তবে আসল কারণটা ঠিক কি? তা জানতেই এদিন আনন্দবাজার পত্রিকার আনন্দ প্লাসের তরফে বার কয়েকের চেষ্টায় যোগাযোগ করা হয়েছিল অভিনেত্রীর সাথে। জবাবে তিনি প্রথমেই সাফ জানিয়ে দেন ‘ধারাবাহিকে যে অসভ্যতা দেখানো হচ্ছে তা আমি মানতে পারছিলাম না। এই সময়ে দাঁড়িয়ে একটা সিরিয়াল কি করে এতটা রিগ্রেসিভ হতে পারে?’
প্রসঙ্গত মেয়েবেলা শুরুর আগে অভিনেত্রীকে তাঁর চরিত্রটা যেভাবে ব্রিফ করা হয়েছিল তার সঙ্গে নাকি এখন পর্দায় যে চরিত্র দেখানো হচ্ছে তার কোন মিল নেই। এমনটাই দাবি করেছেন খোদ অভিনেত্রী। তাই মেয়েবেলা শুরুর আগে বিথীকা মিত্রের চরিত্রটি নিয়ে রূপা গাঙ্গুলি ঠিক যতটা উচ্ছসিত ছিলেন ছাড়ার পর এই চরিত্রটি নিয়ে তিনি ঠিক ততটাই বিরক্ত। এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী এদিন জানান ‘আমি এই ধারাবাহিকটি করতে রাজি হয়েছিলাম একটাই কারণে। খুব সুন্দর একটা গল্প ছিল। আমাকে যে ক্যারেক্টার ব্রিফ দেওয়া হয় সেটার সঙ্গে পর্দায় দেখানো ঘটানোর মিল নেই’।
প্রসঙ্গত সিরিয়ালটি যারা নিয়মিত টিভির পর্দায় দেখছেন তারা জানেন ইদানিং বিথীকা মিত্রের চরিত্রটিকে খল চরিত্র হিসেবে দেখানো হচ্ছে। তাই সে কখনো শাশুড়ির সোনার হার নর্দমায় ফেলে দিচ্ছে আবার কখনো ভাত ফেলে দিচ্ছে। এসবের সঙ্গে নিজেকে একেবারেই মানিয়ে নিতে পারছিলেন না রুপা গাঙ্গুলী। তবে তাঁর সহ্যের বাঁধ ভাঙে যখন তিনি জানতে পারেন সিরিয়ালে তার ছেলের বউকে চড় মারতে হবে। এই কথা শোনার পরেই নাকি সিরিয়াল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন অভিনেত্রী।
রূপা গাঙ্গুলীর কথায় ‘এগুলো ৪০ বছর আগে দেখালেও মানা যেত। সবচেয়ে বড় কথা বিথী যে ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে তার পিছনে কোন যুক্তি নেই।’ তাই এই ধরনের গল্প দেখানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ইতিপূর্বে নাকি অনেকবার তিনি চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু বারবার তারা যুক্তি দিয়েছেন ‘বাজারে এখন নাকি এটাই চলছে। দর্শকরা নাকি এটাই চাইছেন।’
এমনকি এই ব্যাপারে তিনি সিরিয়ালের প্রযোজক নিসপাল সিং রানের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু এসব ক্ষেত্রে নাকি চ্যানেলের সিদ্ধান্তই শেষ কথা। তবে এই বিথী চরিত্রটি নিয়ে রূপা গাঙ্গুলীর অস্বস্তি কিন্তু আজকের নয়। অভিনেত্রীর কথা জানা যায় ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই এই চরিত্রটি নিয়ে বেশ সমস্যার মধ্যে রয়েছেন তিনি। কিন্তু চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত এপ্রিল মাসে তিনি প্রযোজককে চিঠি দেন এবং অবশেষে সিরিয়াল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন।
আসলে রুপা গাঙ্গুলী যে মাপের অভিনেত্রী তাঁকে এই ধরনের চরিত্রে দেখতে দেখে একেবারেই মেনে নিতে পারছিলেন না অনুরাগীদের একটা বড় অংশ। অভিনেত্রীর কথায় ‘অনেকেই আমাকে বলেছেন যে তাদের ভালো লাগছে না ওইভাবে আমাকে দেখতে। আমারও মানসিক কষ্ট হচ্ছে। প্রত্যেকদিন সেট থেকে বাড়ি ফিরে মন খারাপ হয়ে যেত। ভাবতাম কি ধরনের চরিত্র করছি আমি। কেঁদেছি পর্যন্ত।