রতন টাটা (Ratan Tata) এমন একজন ব্যক্তিত্ব যিনি বিশ্বদরবারে বহুবার ভারতের নাম উজ্জ্বল করেছেন। আজ দেশের বৃদ্ধ থেকে বাচ্চা- প্রত্যেকে তাঁকে চেনে, শ্রদ্ধা করে। নিজের কাজের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছ থেকে এই ভালোবাসা আদায় করে নিয়েছেন তিনি। নুন থেকে শুরু করে বিমান- আজ ভারতের সব ক্ষেত্রে টাটা কোম্পানির অবাধ বিচরণ। যদিও আজকের প্রতিবেদনটি টাটা সংস্থা কিংবা রতন টাটাকে নিয়ে নয়, বরং তাঁর ছায়াসঙ্গী যুবক শান্তনু নায়ডুকে (Shantanu Naidu) নিয়ে।
রতন টাটার সঙ্গে প্রায়শয়ই এক অল্প বয়সী তরুণকে দেখতে পাওয়া যায়। ছবি কিংবা ভিডিও দেখেই পরিষ্কার যে এই যুবকের সঙ্গে বেশ মধুর সম্পর্ক বর্ষীয়ান ব্যবসায়ীর। বছর ৩০’র শান্তনু পেশায় একজন ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, লেখক এবং সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার। তিনি এমবিএ করেছেন কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
১৯৯৩ সালে মহারাষ্ট্রের পুনে শহরে জন্ম শান্তনুর। তাঁর লিঙ্কডিন প্রোফাইল খুললেই দেখা যায়, ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে টাটা সংস্থার সঙ্গে জড়িত তিনি। এই মুহূর্তে টাটার অফিসে জেনারেল ম্যানেজার পোস্টে কাজ করছেন শান্তনু। পাশাপাশি গত বছরই একটি বিনিয়োগ সংস্থাও প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি।
শান্তনু নিজের সংস্থার নাম রেখেছেন ‘টাটা গুডফেলোস’। তিনি সেই সময় বলেছিলেন, গোটা বিশ্বে প্রায় ৫ কোটি বয়স্ক মানুষ রয়েছে, যারা নিঃসঙ্গ। তাঁদের কথা ভেবেই এই অ্যাপ চালু করছেন তিনি। এতে প্রচুর তরুণদেরও নিয়োগ করেছেন শান্তনু। জানা গিয়েছে, এই সংস্থা গত মাসে মুম্বইয়ে ২০জন বয়স্ক মানুষের সঙ্গে বিটা পর্যায়ে কাজ করেছে। তবে শুধু মুম্বই নয়, চেন্নাই, পুনে এবং বেঙ্গালুরুতেও ‘টাটা গুডফেলোস’র পরিষেবা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
টাটা সংস্থার একজন উচ্চপদস্থ কর্মচারী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শান্তনু রতন টাটার বন্ধুও। বর্ষীয়ান ব্যবসায়ীকে তিনি ‘বস’, ‘মেন্টর’র পাশাপাশি ‘বন্ধু’ বলেও সম্বোধন করেন। নিজের ৮৫তম জন্মদিনটা এই শান্তনুর সঙ্গেই কাটিয়েছিলেন রতন টাটা। জানা গিয়েছে, ৩০ বছর বয়সী এই তরুণ মূলত ব্যবসা এবং বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে রতন টাটাকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এককথায় তিনি হলেন বর্ষীয়ান শিল্পপতির ছায়াসঙ্গী।
জানা যায়, ২০১৪ সালে শান্তনুর সঙ্গে রতন টাটার প্রথম আলাপ। সেই বছর একটি পথ দুর্ঘটনায় নিজের পোষ্যকে হারিয়ে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছিলেন এই তরুণ। এরপর রাস্তার কুকুরদের জন্য একটি এনজিও খোলেন তিনি। পাশাপাশি কুকুররা যাতে পথ দুর্ঘটনার কবলে না পড়ে সেই জন্য একটি বেল্ট লাগানোর ব্যবস্থা করেন শান্তনু যা অন্ধকারে চকচক করে। এরপরেই রতন টাটা এই যুবককে নিজের কাছে নিয়ে আসেন। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মুহূর্তে বার্ষিক ২৭ লাখ টাকা বেতন পান শান্তনু। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৬ কোটি টাকা।