আশেপাশে খোঁজ নিলে কিছু অদ্ভুত প্রেম কাহিনী সম্পর্কে জানতে পারা যায়। যেগুলো হয়তো সিনেমার কাহিনীকেও হার মানিয়ে দিতে পারে। আজকে রাজস্থানের জয়পুরের এক অটোওয়ালার কাহিনী আপনাদেরকে জানাবো যেটা বাস্তব জীবনে এক্কেবারে সত্যি ঘটনা। তবে সিনেমার গল্পের থেকেও দারুন এই প্রেম কাহিনী। সিনেমার গল্পের হয়তো অনেকবারই দেখেছেন বিদেশী মেম সাহেব ভারতে এসে প্রেমে পড়ে গেছে ভারতীয় যুবকের সাথে এবং সেই প্রেম পরিণতি হয়েছে বিয়েতে। কিন্তু এবার সিনেমার এই গল্প একেবারে বাস্তব জীবনে দেখা গেল রাজস্থানের জয়পুরে।
সুদূর ফ্রান্স থেকে জয়পুরে বেড়াতে এসেছিলেন এক বিদেশিনি। বেড়াতে এসে পরিচয় হয় জয়পুরের ছেলে রণজিৎ সিংহ রাজ এর সাথে। রণজিৎ মোটেও উচ্চশিক্ষিত নয়, স্কুলে মাধ্যমিকের গন্ডিও পেরোতে পারেনি সে। মাত্র ১৬ বছর বয়স থেকেই অটো চালাতে শুরু করেছিল রণজিৎ। কিন্তু এই অটোচালক রণজিৎের জীবন একেবারে বদলে গিয়েছে হটাৎ করেই।
বর্তমানে রণজিৎ ইন্ডিয়া নয় বরং সুইজারল্যান্ডের জেনেভার বাসিন্দা। এমনকি যে কিনা মাধ্যমিকের গন্ডি পেরোতে পারেনি একসময় সে আজ গড়গড় করে ইংরেজি বলতে পারে। এখানেই শেষ নয় সে ফরাসি ভাষায় বলতে পারে। নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে রণজিৎের। সেখানে জিনের দৈনন্দিন জীবন সম্পকে ভিডিও বানিয়ে শেয়ার করে সে।
কিন্তু কিভাবে হল এই পরিবর্তন! আগেই বলেছি প্রেমে পরেই ভাগ্য ফিরেছে রণজিৎের। আসলে রণজিৎ দেখে তার আশেপাশের আউটওয়ালারা বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করে ভালো টাকা রোজগারের জন্য বিদেশী কথা বলার চেষ্টা করছে। তখনই মাথায় দারুন আইডিয়া আসে রণজিৎের। ঠিক করে নেন বিদেশী ভাষা শিখবেন তিনি। এরপর ইংরেজি শেখার পাশাপাশি ট্যুরিজমের ব্যবসা শুরু করেন।
ট্যুরিজমের ব্যবসার সূত্রেই ফ্রান্স থেকে ঘুরতে আসা এক মহিলার সাথে প্রেমে পরে যান রণজিৎ। ফরাসি প্রেমিকা দেশে ফিরে গেলেও যোগাযোগ ছিল বরাবর। এরপর ফ্রান্সের ভিসা পাবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় রণজিৎ তখন প্রেমিকা ভারতে এসে ফ্রান্সের দূতাবাসের সামনে ধর্নায় বসে তিন মাসের ভিসা পায়। তারপর ফ্রান্স গিয়ে ২০১৪ সালে বিয়ের করেন দুজনে। এরপর ফ্রান্সের পাকাপাকি ভিসা পেতে শিখতে হয়েছে ফরাসি ভাষা।
বর্তমানে জেনেভাতেই থাকে রণজিৎ। ফরাসি মেমসাহেব কে বিয়ে করে সেখানেই একটি রেস্তোরায় কাজ করে রান্নার। ইচ্ছা আছে নিজস্ব রেস্তোরা খোলার। সেখানে দুই সন্তান রয়েছে রণজিৎের। দুই সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে দিব্যি দিন কাটাচ্ছে রণজিৎ! তাহলে কি বুঝলেন? আপনিও আপনার বিদেশিনী খোঁজে লেগে পড়ুন। বলা যায় না হয়তো আপনার জীবনটাও বদলে যেতে পারে।