প্রত্যেকের মধ্যেই কিছু না কিছু প্রতিভা রয়েছে এমন কথা অনেকেই বলেন। তবে তাঁরা হয়তো একথাটা বলতে ভুলে যান যে শুধু প্রতিভা থাকলেই হয় না। কারণ একসময় অভাবের তাড়নায় অনেক প্রতিভাবানরা হারিয়ে যায়। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে আজ আপনাদের জানতে হবে এক ক্রিকেটারের কথা। যে ক্রিকেটের প্রতিটা ম্যাচ আমরা সবাই টিভির পর্দায় দেখে উচ্ছসিত হই বা খেলার মাঠে দেখে দারুণ আনন্দ পাই সেই ক্রিকেট খেলোয়াড় আজ অসহায়।
ক্রিকেটের ভগবান বলতে অনেকের মাথাতেই সবার আগে যে নামগুলো আসে সেগুলো হল সৌরভ গাঙ্গুলি বা শচীন তেন্ডুলকার। তবে এমন কিছু প্রতিভাবান ক্রিকেটার রয়েছে আমাদের দেশে যাদের কথা আমরা জানতেও পারি না। কারণ কোনো জাতীয় দলে সুযোগ পায়নি তারা। তাই প্রচারের আলো থেকে বঞ্চিত হবার দরুন তারা অচেনা।
কিছু বছর আগে পর্যন্ত রঞ্জি ছিল ক্রিকেটারদের জন্য এই কথাটা ছিল একেবারে চরম সত্যি কথা। দুচোখে ক্রিকেটার হবার স্বপ্ন নিয়ে অনেক ক্রিকেটার আসতেন। যাদের হয়তো খাবারতও জুটতো না ঠিক মত। তবু খেলার প্রতি ভালোবাসা নিয়েই আসতেন রঞ্জি খেলতে। আজ এমন এক ক্রিকেটারের গল্প তুলে ধরব।
আজকের ক্রিকেটের জগতের নাম করা সৌরভ শচীনের সাথে খেলেছেন এই ক্রিকেটার। একজন প্রতিভাধারী স্পিনার তিনি। তবে প্রতিভার যথেচ্য মূল্য পাননি তিনি। আজ অভাবের তাড়নায় ডালপুরি বিক্রেতা হয়ে গিয়েছেন একসময়ের প্রতিভাবান বা হাতি স্পিনার। কে তিনি? তিনি হলেন প্রকাশ ভকত। আসামের হয়ে দু’বছর রঞ্জিও খেলেছেন তিনি।
একসময়ে ডাক পেয়েছিলেন জাতীয় দলে। নিউজিল্যান্ডের বিখ্যাত স্পিনার ড্যানিয়েল ভেট্টোরির মত বোলিংয়ের জন্য ২০০২-০৩ সালের আগে নিউজিল্যান্ড সফরে যাবার আগেই মিলেছিল ডাক। তার বোলিংয়েই অভ্যাস করতেন সৌরভ শচিনেরা। কিন্তু হটাৎই প্রকাশের বাবা মারা যান। এরপরই বন্ধ হয়ে যায় তার ক্রিকেট খেলা।
বাবা চলে যাওয়ায় ধীরে ধীরে চরম দরিদ্রতা গ্রাস করে প্রকাশকে। সরকারি কোনো সাহায্যও মেলেনি, তাই প্রতিভাবান স্পিনারের খেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছে চিরতরে। বর্তমানে আসামের শিলচর এলাকায় একটিরাস্তার ধরে ডালপুরি বিক্রি করছেন প্রকাশ। একসময় যার বোলিংয়ে অনুশীলন করলেন সৌরভ শচীনের মত ক্রিকেটাররা সেই প্রকাশ হারিয়ে গিয়েছেন দারিদ্রতার অন্ধকারে।