Rakhi 2023 : ৩০ আগস্ট, বুধবার তথা আজ গোটা দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে রাখি বন্ধন (Rakhi Bandhan) উৎসব। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদ স্বরূপ হিন্দু-মুসলিমের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore) রাখি বন্ধনের প্রথম চালু করেছিলেন। তবে পুরাণ (Mythology) অনুযায়ী, প্রায় ৬০০০ বছর ধরে রাখি বন্ধন উৎসব চলে আসছে। প্রত্যেক বছর শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথির দিন এই উৎসব পালন করা হয়।
পুরাণ অনুযায়ী, দ্রৌপদী শ্রীকৃষ্ণকে নিজের দাদার মতো সম্মান করতেন। অপরদিকে শ্রীকৃষ্ণও তাঁকে নিজের বোনের চোখে দেখতেন। নিজের চক্র দিয়ে চেদি রাজ্যের শাসক শিশুপালের শিরচ্ছেদ করার সময় শ্রীকৃষ্ণের হাত কেটে গিয়েছিল। সেই সময় দ্রৌপদী নিজের বস্ত্র ছিঁড়ে তাঁর হাতে বেঁধে দিয়েছিলেন। শ্রীকৃষ্ণ তখন বোন দ্রৌপদীকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন। পরবর্তীকালে বস্ত্রহরণের সময়ও দ্রৌপদীর সম্মানরক্ষা করেছিলেন তিনি।
এছাড়াও রাখি বন্ধন নিয়ে আরও বেশ কিছু পৌরাণিক কাহিনী শুনতে পাওয়া যায়। শোনা যায়, যমরাজের বোন যমুনা নিজের দাদার দীর্ঘায়ুর জন্য তাঁর হাতে রাখি পরিয়েছিলেন। আর একটি কাহিনী অনুসারে, দেবী লক্ষ্মী একবার দরিদ্র এক নারীর বেশ ধারণ করে বানররাজ বালির কাছে আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন। সেই সময় তিনি বালির হাতে এক টুকরো কাপড় বেঁধে দিয়েছিলেন। তখন থেকেই নাকি রাখি বন্ধন উৎসবের প্রচলন হয়।
তবে শুধু পুরাণেই নয়, ইতিহাসেও রাখি বন্ধনের উল্লেখ আছে। মুঘল সম্রাট হুমায়ুন এবং মেবারের রানী কর্ণবতীর ভাই-বোনের সম্পর্ক ছিল। কর্ণবতীর স্বামীর মৃত্যুর পর গুজরাটের সুলতান বাহাদুর শাহ মেবার আক্রমণ করেন। তখন একটি রাখি পাঠিয়ে হুমায়ুনের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন কর্ণবতী। মুঘল সম্রাট বোনের সেই ডাকে সাড়া দিয়ে মেবার রক্ষা করেছিলেন।
এছাড়াও ইতিহাসে রাখি বন্ধন নিয়ে আরও একটি কাহিনী শোনা যায়। আলেকজান্ডার এবং পুরুর যুদ্ধের সময় আলেকজান্ডার পত্নী রুকসানা পুরুর কাছে একটি রাখি পাঠিয়েছিলেন এবং নিজের স্বামীর প্রাণভিক্ষা করেছিলেন। পুরু বোনের সেই কথা রেখেছিলেন। আলেকজান্ডারকে বাগে পেলেও তিনি হত্যা করেননি। ভাইবোনের মধ্যেকার এই ভালোবাসার দিন হিসেবেই যুগ যুগ ধরে রাখি বন্ধন উৎসব পালিত হয়।