বলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা রাজকুমার (Rajkumar)। নিজের দুর্দান্ত অভিনয় দিয়ে কোটি কোটি দর্শকদের হৃদয় জিতে নিয়েছেন অভিনেতা। যেমন দুর্দান্ত অভিনয় তেমনি ছিল তাঁর পার্সোনালিটি, রুপোলি পর্দায় রাজকুমারের অভিনয় আজও রুচিশীল দর্শকদের কাছে সমাদৃত। তবে অভিনেতাকে নিয়ে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক কাহিনী রয়েছে নিজের মেজাজ ও অদ্ভুত কিছু ব্যবহারের জন্য বেশ চর্চিত তিনি।
রাজকুমার এমন একজন অভিনেতা যিনি নিজের শর্তে সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য রাজি হতেন। তাঁর ছবির কাহিনী ও চরিত্র পছন্দ হলে তবেই ছবির জন্য হ্যাঁ করতেন। ছবির কাহিনী বা চরিত্র পছন্দ না হলে সোজা না করে দিতেন। এমনকি জানলে হয়তো অবাক হবেন, বর্তমানে ছবি ফ্লপ হলে পরবর্তী ছবি কিভাবে পাবেন ভাবতে থাকেন অভিনেতার। সেখানে নিজের ছবি ফ্লপ হলেও পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দিতেন রাজকুমার।
অল্পস্বল্প নয় ১৯৮০-৯০ এর দশকেও ছবি ফ্লপ হলে ১ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক বাড়িয়ে দিতেন রাজকুমার। এই কথা অভিনেতা নিজেও একসময় এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছিলেন। তাঁর মতে, ছবি ফ্লপ হতেই পারে, তবে আমি নই। আমি নিজের চরিত্রকে সমস্তটা দিয়ে কাজ করি। তাই আমি মনে করি না যে আমি আমার তরফ থেকে ব্যর্থ হয়েছি। চলচ্চিত্র হয়তো ফ্লপ হয়েছে তবে আমি না।
১৯৯৪ সালে রাজকুমার, শত্রুঘ্ন সিনহা ও মুকেশ খান্না বলিউডের তিনজন বড় তারকা মিলে অভিনয় করেন ‘বেতাজ বাদশাহ’ ছবিতে। তিন সুপারস্টার থাকা সত্ত্বেও ফ্লপ হয়ে যায় ছবি। তবে নিজের অভিনয় সম্পর্কে কোনো সন্দেহ ছিল না অভিনেতার। বলিউডে যে সময়ে রাজেশ খান্না, দিলীপ কুমারের মত অভিনেতারা একেরপর এক হিট ছবি দিয়ে একপ্রকার রাজত্ব করতেন সেই সময় নিজের জায়গা তৈরী করেছিলেন রাজকুমার।
তবে নিজের বদরাগী মেজাজের জন্য বহুবার বিতর্কে পড়তে হয়েছিল তাকে। পরিচালক থেকে সহ অভিনেতার সাথেও দুর্ব্যবহার করেছেন। এমনকি একবার তো দিলীপ কুমারের সাথে ব্যাপক ঝগড়া হয়ে গিয়েছিল। যে কারণে রাজকুমারের সাথে কোনোদিনও কাজ না করার প্রতিজ্ঞা নিয়েছিলেন দিলীপ কুমার।
সালটা ১৯৫৯, পেয়গাম ছবির জন্য একত্রে শুরু করছিলেন দুজনে। ছবিতে দিলীপ কুমারের বড় ভাইয়ের চরিত্রে ছিলেন রাজকুমার। একটি দৃশ্যে ভাইকে চড় মারার কথা ছিল, সেই সময় দিলীপ কুমারকে জোরে আঘাত করে বসেন রাজকুমার, যেটা দিলীপ কুমারকে রাগিয়ে তোলে। এরপর থেকে দীর্ঘদিন মুখ দেখাদেখি থেকে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন তাঁরা।
তবে ৩২ বছর পর ‘সওদাগর’ ছবিতে আবারো একসাথে কাজ করেন দুজনে। যদিও শুটিংয়ের সময় প্রয়োজন টুকুই কথা বলেছেন দুজনে। এছাড়া তাদের খুব একটা কথাবার্তা হতে দেখা যায়নি। তবে এই ছবিটিতে করার পরবর্তী সময়ে দুজনের মধ্যেকার সম্পর্ক অনেকটা শুধরাতে শুরু করেছিল।