বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির (Tollywood) ‘মহানায়িকা’ (Mahanayika) তিনি, সুচিত্রা সেনের (Suchitra Sen) সঙ্গে কাজ করার জন্য মুখিয়ে থাকতেন প্রত্যেকে। যদিও শুধুমাত্র টলিউডেই নয়, হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও কাজ করেছেন তিনি, তৈরি করেছেন নিজের পরিচয়। প্রথম বাঙালি শিল্পী হিসেবে আন্তর্জাতিক সম্মানে ভূষিত হওয়া থেকে শুরু করে শেষ জীবনে লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যাওয়া- সিনেমার চেয়ে কম নয় ‘মহানায়িকা’র ব্যক্তিগত জীবন।
অনেকেই জানেন, সুচিত্রা এমন একজন ব্যক্তিত্ব যিনি ছবি সই করার বিষয়ে ছিলেন প্রচণ্ড খুঁতখুঁতে। অনেক ভেবেচিন্তে একটি ছবির জন্য সই করতেন তিনি। তিনি এমন একজন নায়িকা যিনি কিংবদন্তি সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন কারণ পরিচালক চেয়েছিলেন ‘মহানায়িকা’ শুধুমাত্র তাঁর সঙ্গে কাজ করুক। অপরদিকে তাঁর আরও কিছু জায়গায় কথা দেওয়া ছিল।
অবশ্য শুধুমাত্র সত্যজিৎ রায়কেই নয়, কিংবদন্তি রাজ কাপুরকেও (Raj Kapoor) মুখের ওপর মানা করে দিয়েছিলেন ‘মহানায়িকা’। ‘আমার বন্ধু সুচিত্রা সেন’ বইয়ের জন্য অমিতাভ চৌধুরীর সঙ্গে আলাপচারিতার সময় একথা ফাঁস করেছিলেন সুচিত্রা নিজে। অভিনেত্রী বলেছিলেন, রাজ কাপুর তাঁকে ছবি অফার করার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ‘না‘ বলে দিয়েছিলেন তিনি।
সুচিত্রার কথায়, ‘পুরুষদের মধ্যে আমি রূপের খোঁজ করি না। আমি বুদ্ধিমত্তা এবং তীক্ষ্ণ বার্তালাপ পছন্দ করি। আমি প্রায় তৎক্ষণাৎ রাজ কাপুরের অফার রিজেক্ট করে দিয়েছিলেন। উনি নায়িকার চরিত্রের অফার নিয়ে আমার বাড়ি এসেছিলেন। আমি বসা মাত্রই উনি আচমকা আমার পায়ের সামনে এসে বসেন এবং আমায় গোলাপের তোড়া উপহার করেন। আমি অফার ফিরিয়ে দিই। আমার ওনার ব্যক্তিত্বটা ভালোলাগেনি। যেভাবে উনি আচরণ করেছিলেন, আমার পায়ের সামনে বসেছিলেন, একজন পুরুষকে তা শোভা দেয় না’।
একই বইয়ে ‘মহানায়িকা’ বলেছিলেন, বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা সঞ্জীব কুমারের সঙ্গে তাঁর আবার দারুণ সম্পর্ক ছিল। অভিনেত্রীর কথায়, ‘সঞ্জীব কুমারের সঙ্গে আমার দারুণ বন্ধুত্ব ছিল। উনি একজন দারুণ মানুষ ছিলেন। পাশাপাশি একজন দুর্দান্ত অভিনেতাও ছিলেন। উনি কলকাতায় আসলেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং আমার বাড়ি আসতেন’।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সুচিত্রার প্রথম হিন্দি ছিল ছিল ‘দেবদাস’। ১৯৫৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সেই ছবিতে তিনি কিংবদন্তি দিলীপ কুমারের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন। তবে বলিউডে তাঁর জনপ্রিয়তা পাওয়া শুরু হয় গুলজারের ‘আঁধি’ ছবির মাধ্যমে। শোনা যায়, সেই ছবিতে মহানায়িকার চরিত্রটি ইন্দিরা গান্ধীর ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল। এই ছবিতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করে অভিনেতা সঞ্জীব কুমার।