গতকাল সকাল থেকেই আচমকা অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের (Abhishek Chatterjee) অকাল প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা টলিউড (Tollywood) ইন্ডাস্ট্রিতে। বুধবার অসুস্থ শরীরেই শেষবারের মতো সেরেছিলেন সিরিয়ালের শুটিং। সেদিন মাঝরাতেই ১’টা বেজে ৪০ মিনিট নাগাদ সবাইকে কাঁদিয়ে চিরঘুমের দেশে চলে গেলেন আমাদের সকলের প্রিয় মিঠুদা। শিল্পীর এমন আকস্মিক মৃত্যুতে কার্যত স্তম্ভিত সকলেই। মৃত্যু কালে অভিনেতার বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৭ বছর।
অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের এই অকাল প্রয়াণের খবর পাওয়া মাত্রই গতকাল সকাল থেকেই নবীনা সিনেমাহল লাগোয়া বহুতলের সামনে ছিল লোকে লোকারণ্য। কাঠখোট্টা রোদের মধ্যে দাঁড়িয়েই কান্নার রোল উঠেছিল শোকে বিধ্বস্ত একাধিক জনপ্রিয অভিনেতা অঅভিনেত্রীদের। উপস্থিত ছিলেন অভিষেকের খড়কুটো সিরিয়ালের মেয়ে গুনগুন থেকে শুরু করে ঐন্দ্রিলা, এছাড়াও ছিলেন অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী হালদার, লাবণী হালদার, কৌশিক ব্যানার্জী সহ আরও অনেকে।
এরইমধ্যে প্রয়াত অভিনেতার বাড়ির সামনে হঠাৎই এসে দাঁড়ায় একটি বড় গাড়ি। চোখে রোদচশমা,পরনে সাদা-কালো পোশাক পরে সেই গাড়ি থেকে নেমে এলেন টলিপাড়ার অন্যতম ব্যস্ত অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (Rachna Banerjee)। একদিন আগে পর্যন্তও কেউ ভাবতে পারেনি এমন একটা বড় ঝড় আসতে চলেছে ইন্ডস্ট্রিতে। গতকাল আবাসনের গ্যারেজের সামনে শায়িত অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের নিষ্প্রাণ দেহের দিকে তাকানো যাচ্ছিল না।
প্রসঙ্গত অভিনেত্রী রচনা বন্দোপাধ্যায়ের ইন্ডাস্ট্রির একাধিক তারকাদের সাথে সদ্ভাবের কথা অজানা নয় কারও। অভিনেত্রীর অভিনয়ের সূত্র ধরে পাওয়া বেশ কয়েকজন কাছের মানুষদের মধ্যেই অন্যতম ছিলেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। কিছুদিন আগেই বাবাকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন অভিনেত্রী। মানসিক ভাবে এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন যার জেরে কাজ থেকেও সাময়িক বিরতি নিয়েছিলেন সেসময়। বাবার মৃত্যু শোক কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার এক বড় সড় আঘাত পেলেন অভিনেত্রী। প্রিয় মিঠুদার এইভাবে অকালে চলে যাওয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন অভিনেত্রী।
কোনরকম সান্ত্বনা দিয়ে এদিন ধরে রাখা যাচ্ছিল না রচনাকে। প্রয়াত অভিষেক চ্যাটার্জীর বুকের ওপর আছড়ে পরে হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় অভিনেত্রী কে। কাঁদতে কাঁদতেই রচনা বলতে শুরু করেন“কী করে হতে পারে? আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। আমার বাবার পর যে কয়েকজন মানুষ আমার সবচেয়ে কাছের ছিলেন, তার মধ্যে তুমিই তো একজন। এটা কী করে হতে পারে?” এছাড়াও এদিন ফেসবুকে প্রিয় মিঠুদার সাথে কাটানো মুহুর্তের একগুচ্ছ ছবি দিয়ে রচনা লিখেছেন “কোথায় তুমি চলে গেলে, এখনও অনেক কথা বাকি রয়ে গেল যে দাদা।”