আজ ২৫ বৈশাখ। এই দিনেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন বাংলা তথা গোটা ভারতের গর্ব ‘কবিগুরু’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore)। সাহিত্য এবং সঙ্গীতের ক্ষেত্রে তাঁর অবদান সমৃদ্ধ করেছে এই দেশকে। তবে অনেকেই জানেন না, রবীন্দ্রনাথের অবদান কিন্তু শুধুমাত্র সাহিত্য এবং সঙ্গীত জগৎ অবধিই সীমাবদ্ধ ছিল না। ডাক্তারি-কৃষিকাজের ক্ষেত্রেও তাঁর অবদান ছিল প্রচুর। আজকের প্রতিবেদনে ‘কবিগুরু’র সম্বন্ধে এমন ১৫ অজানা তথ্য (Unknown facts) তুলে ধরা হল যা আজও অজানা অনেকের কাছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মানেই অধিকাংশ মানুষের মাথায় সাহিত্য, আঁকা, সঙ্গীতের কথাই প্রথমে আসে। তবে হাতেগোনা কিছু মানুষই জানেন, দাদা হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে শিক্ষাগ্রহণের পাশাপাশি জিমন্যাস্টিক, জুডো এবং কুস্তিও শিখতেন তিনি। ‘কবিগুরু’ প্রথাগত-পুঁথিগত শিক্ষায় বিশ্বাসী ছিলেন না। মুখস্ত বিদ্যার বিরোধিতা করতেন তিনি। পরবর্তীকালে সেই কারণে শান্তিনিকেতনে নিজের মনের মতো করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন।
রবীন্দ্রনাথ দিনের একটি বড় অংশ লেখালেখির কাজে ব্যয় করতেন। ভোর ৪টের সময় উঠে প্রথমে স্নান-পুজো করতেন তিনি। এরপর লেখালেখি শুরু করতেন। একটানা রাত ১২টা অবধি পড়তে কিংবা লিখতে পারতেন তিনি। এছাড়া তিনি ছিলেন আদ্যোপান্ত ভোজন রসিক মানুষ। দুপুরে জমিয়ে বাঙালি খাবার এবং রাতে ইংরেজ খাবার খেতেন তিনি।
অনেকেই জানেন না, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হোমিওপ্যাথির ওপর অগাধ আস্থা ছিল। সেই জন্য তিনি নিজের জমিদারি প্রজাদের এই চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া শুরু করেছিলেন। তিনি নিজেও অ্যালোপ্যাথি নয়, বরং হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাই করাতেন। ‘হেলথ কো-অপারেটিভ’ বানিয়ে এই দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রচলন তিনিই প্রথম করেন।
রবীন্দ্রনাথ ছিলেন একজন সমাজসেবী মানুষ। নোবেল পুরস্কার পাওয়ার সঙ্গে তিনি যে অর্থ পেয়েছিলেন তা সমাজের উন্নয়নের জন্য ব্যয় করেছিলেন। এই অর্থ দিয়ে ‘কবিগুরু’ নিজের পুত্র রথীন্দ্রনাথ এবং বন্ধুর ছেলে সন্তোষ মজুমদারকে বিদেশে কৃষি এবগ্ন পশুপালন নিয়ে পড়াশোনা করতে পাঠিয়েছিলেন। রথীন্দ্রনাথ এবং সন্তোষ দেশে ফিরে পতিসর এবং শিলাইদহে ৮০ বিঘা জমিতে আদরশক ল্যাবরেটরি এবং কৃষি ক্ষেত্র বানিয়েছিলেন।
এছাড়াও ১৯০৫ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিসর কৃষি ব্যাঙ্কও চালু করেছিলেন। নোবেল পুরস্কারের সময় প্রাপ্ত অর্থ কৃষকদের সুবিধার্থে তিনি ব্যবহার করেছিলেন। কৃষিকাজের জন্য কৃষকরা যাতে কম সুদে ঋণ নিতে পারেন সেই জন্য এই ব্যাঙ্ক চালু করেন তিনি। ২০ বছর এই ব্যাঙ্ক চলেছিল। সাহিত্য, সঙ্গীত, আঁকা, নাটকের পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নৃত্যেও পারদর্শী ছিলেন। ছেলেবেলায় বল ডান্স শিখেছিলেন তিনি। ‘কবিগুরু’ নিজস্ব নৃত্যশৈলী ‘ভাব নৃত্য’র জন্ম দিয়েছিলেন।