প্রতিটি বাবা মা চায় তাদের সন্তান যেন লেখাপড়া শিখে ভালো মানুষ হয়। যোগ্যতায় একটা ভালো চাকরি পায় বা ব্যবসা করতে পারে।এর জন্য প্রতিটা মা বাবাই তাদের সন্তানদের লেখাপড়া শিখতে স্কুল পাঠাতে চায়। কিন্তু আজও এমন কিছু পরিবার রয়েছে যাদের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে চাইলেও লেখাপড়াটা তাদের কাছে যেন বিলাসিতা। তবে, ইতিহাস সাক্ষী আছে শুধু যে লেখাপড়া শিখলে তবেই বড়লোক বা প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায় তা কিন্তু ভুল।

অনেক এমন ব্যক্তিত্ব রয়েছে যারা নামমাত্র পড়াশোনা করে বা কেউ কেউ তো পড়াশোনা না করেই আজ কোটি কোটি টাকার মালিক। সমাজে তাদের আলাদাই একটা পরিচয় আছে, সাথে সন্মানও রয়েছে। আজ এরকমই এক ব্যক্তির কথা জানাবো আপনাদের।
পরীক্ষার রেজাল্টের দিন সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের মনের মধ্যেই একটা ভয় ও চিন্তা থাকে। কি হবে! কত নাম্বার পাব, বাড়ির লোক দেখে কি বলবে ইত্যাদি। অনেকের পরিবারেই মা বাবা অনেক কষ্টে সংসার চালিয়ে ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ চালান। সেখানে যদি বছরের শেষে পরীক্ষায় ফল খারাপ হয় বা পাশ না করতে পারে তখন কপালে দুঃখ তো থাকেই। আজ যার কথা বলতে চলেছি সেই ব্যক্তি তার ষষ্ঠ শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি।

আর স্বাভাবিকভাবেই পাশ না করতে পেরে মনখারাপ হবার সাথে সাথেই ভয় ও চিন্তার উদয় হয়েছিল মনে। এদিকে তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুবই শোচনীয়, অনেক কষ্টে লেখাপড়া শেখানো হচ্ছিল তাকে। তাই সে জানতো পরীক্ষায় পাশ না করতে পারলে বাবা তাকে দিনমজুরের কাজে লাগিয়ে দেবে। আর হলও তাই। ছেলে পাশ করতে পারেনি জেনে বাবা তাকে এক কারখানায় দিনমজুরের কাজে লাগিয়ে দেয়।
খুব ছোট বয়স থেকেই কাজ লেগে পড়তে হয় তাকে। কিন্তু সেদিনের সেই ছেলে আজ ৪০০ কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তির মালিক। এই ব্যক্তি হলেন পিসি মুস্তাফা। কেরালার ওয়ানাডে নামের এক প্রতন্ত গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে জন্মেছিলেন মুস্তাফা। অনেক কষ্টে পড়াশোনা চালাতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছিলেন। যার ফলে ছোট বয়সেই কঠোর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু সেদিনের মুস্তাফা নিজের ওপর আত্মবিশ্বাসের জেরেই আজ সফল হয়েছে।

মুস্তাফাকে আজ সারা দেশের লোকেই চেনে। দিনমজুরের কাজ করে কিছু টাকা জমিয়ে আবার পড়াশোনা শুরু করে মুস্তাফা। এরপর মন প্রাণ দিয়ে পড়াশোনা করে কালিকটের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। এরপর কিছু প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজ করার পরে ফিরে আসেন বেঙ্গালুরুতে। সেখানেই আত্মীয়দের দোকান থেকে ইডলি ধোসার ব্যবসার কথা মাথায় আসে মুস্তাফার।

মুস্তাফা দেখেন ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এই ইডলি ধোসার। এরপই প্যাকেজেড ইডলি ধোসা ব্যবসার কথা মাথায় আসে তাঁর। যেমনি ভাবা তেমনি কাজ, ৫০০০০ টাকা পুঁজি নিয়েই শুরু করেন ব্যবসা। এরপর ছোট থেকে শুরু করেই একদিন আইডি স্পেশাল ফুডস প্রাইভেট লিমিটেড (ID Special Foods Pvt Ltd) তৈরী করেন।

আজ সারা দেশে আটটি শহরে ৭০০ এর কাছাকাছি কর্মী রয়েছে মুস্তাফার, আর তার কোম্পানি ইডলি ধোসা, পরোটা,চাপাটি,চাটনি বানিয়েই ৪০০ কোটি টাকার ব্যবসা করছে।














