“ভালো তবে আরও ভালো করতে হবে” এই মন্ত্র মানুষের কানে বারংবার আওড়ে দিয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা পরাণ বন্দোপাধ্যায় (Paran Bandopadhyay)। তাঁর নামের মতোই মানুষের পরাণ তিনি জিতে নিয়েছেন বহু দশক ধরেই। সৌমিত্র চ্যাটার্জি-দের মৃত্যু হয়না, এই কথাও বলেছিলেন ইন্ডাস্ট্রির অপর মহারথী পরাণ বন্দোপাধ্যায়। একটা জীবনে এত গুলো চরিত্রে যে একই রকম ভাবে নিখুঁত আর স্বকীয় হয়ে ওঠা যায় তা তাকে না দেখলে বিশ্বাস হয়না।
আশির কোটা পেরিয়েও তাই তিনি এভারগ্রীণ। আজকালকার নিউ কামাররা তাঁর সাথে পর্দা ভাগ করবার সুযোগ পেলে নিজেদের ধণ্য মনে করেন। খুব শিগগিরই দেব (Dev) এর সাথে টনিক ছবিতে দেখা মিলবে তাঁর। বয়স অনেক হল তাঁর, কিন্তু ভাবনা চিন্তায় একটুও মরচে পড়েনি বর্ষীয়ান অভিনেতার।
ছেলেবেলাটা আর পাঁচ টা শিশুর থেকে বেশ অন্যরকম পরাণের৷ জন্মের ৫ মাসের মাথাতেই মা হারিয়েছিলেন অভিনেতা। তখন ওই মা হারা দুধের শিশুকে নিজের স্তন্যপান করিয়ে বাঁচিয়েছিলেন কমলা দেবী, যিনি সম্পর্কে অভিনেতার পিসিমা। কিন্তু পরাণের কাছে তিনি মা-ই। তাকেই আমৃত্যু মা বলে মানবেন এবং ডাকবেন পরাণ বন্দোপাধ্যায়।
পিসতুতো দাদা জয়দেব বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন পরাণের পিতৃসম। তিনিই ছিলেন পরাণের আদর আবদারের একমাত্র ঠিকানা, আবার বেয়াদবি করলে শাসন ও করতেন জয়দেব। তাই মা হারিয়েও, মা না থাকার কষ্ট কোনোদিন টের পাননি তিনি। সেই কারণেই তার মনে হওয়া জন্ম দিলেই কেবল মা হওয়া যায়না।
এমনকি বাবার প্রতিও সেভাবে কোনোও টান অনুভব করেননি তিনি। কদাচিৎ গ্রাম থেকে এসে পরাণের সাথে দেখা করতেন তার বাবা। তাঁর হাত ধরে শৈশবে মেলা দেখা, তাঁর উদাত্ত কন্ঠের গান শোনা আজও মনে আছে পরাণের। কিন্তু তিনিও বাবা হয়ে উঠতে পারেননি অভিনেতার, তাকে কাকা বলেই ডাকতেন তিনি। বাবার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে কলকাতাতেই পারলৌকিক ক্রিয়া সেরেছিলেন তিনি, কেননা ওই মানুষটার জন্য আলাদা কোনোও আবেগই তৈরি হয়নি তার।৷