শুনতে হয়তো অবাক লাগে না আর,কিন্তু সত্যি তো তেতো হয় । তাই মানতে কষ্ট হলেও একথা অস্বীকার করা যায় না যে দুর্ভাগ্যবশত আজকের দিনেও আমাদের তথাকথিত শিক্ষিত সমাজে মানুষের বিশেষ করে মেয়েদের গায়ের রঙ দিয়েই সৌন্দর্য বিচার করা হয়। চোখে আঙুল দিয়ে সাদা, আর কালো চামড়ার মধ্যে তুলনা টেনে নির্ধারিত হয় সৌন্দর্যের মাপকাঠি। তবে একটা কথা বলতেই হয় এর মাধ্যমে আসলে এমন ধারণা পোষণকারী মানুষদের মনের কদর্য রূপটাই বেশী করে প্রকাশ পায় সকলের সামনে।
আর গায়ের রঙ নিয়ে হাসির পাত্রী হওয়ার ঘটনা শুধু যে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জীবনেই ঘটে এমনটা কিন্তু নয়। এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয় গ্লামার জগতের অভিনেত্রীদেরও। যার সাম্প্রতিক তম উদাহরণ হলেন টেলিভিশন জগতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রুতি দাস (Shruti Das) । অতীতে একাধিক বার গায়ের রঙের জন্য অসংখ্য মানুষের বিদ্রূপের মুখে পড়তে হয়েছে অভিনেত্রীকে।
কিন্তু কিছুদিন আগে মাত্রা ছাড়িয়ে যায় সবকিছুর। অভিনেত্রীর কপালে জোটে ‘কালিন্দী’ সহ একাধিক ব্যাঙ্গ বিদ্রুপাত্মক নামও। সম্প্রতি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে তিনি জানান তাঁর চাপা রঙের জন্য নাকি নানা ভাবে কটূক্তি করা হয়েছে তাঁকে । যা মেনে নিতে পারেননি তিনি।
এবার এবিষয়ে মুখ খুলেছেন বাংলা সিনেমা জগতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পাওলি দামও (Paoli Dam) । তিনি জানিয়েছেন, চাপা রঙের জন্য একসময় সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাঁকেও । এপ্রসঙ্গে পাওলির দাবি , ‘২০২১ সালে দাঁড়িয়ে গায়ের রঙ ও বডি শেমিং খুবই “অসম্মানজনক” আমি শ্রুতির সঙ্গে হওয়া ঘটনার কথা শুনেছি । এটা আমাদের সকলের জন্য লজ্জাজনক বিষয় । আমার গায়ের রঙ চাপা হওয়ার কারণে অমিও এই সব কিছুর ভুক্তভোগী ।
এছাড়াও অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘অমি একটা চরিত্রের জন্য শরীরের ওজন কমিয়েছিলাম, সেই সময় আমাকে সমালোচনা করা হয়েছিল । আমার মনে হয় সময় যত এগোবে এই সব আরও বাড়বে । আমাদের সময়ের সঙ্গে বদলে যেতে হয়, কিন্ত আমরা কি পারি সেটা ? এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বার বার এই সব অভিজ্ঞতা হয়। আমার মনে হয় রাতারাতি এই সব ঠিক করা যাবে না। কিন্তু আমাদের চুপ করে থাকলেও চলবে না, এই সব নিয়ে সুর চড়াতেই হব।’
সেইসাথে অভিনেত্রীর আরও সংযোজন, ‘কিছু মানুষ আছে যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সব গোঁড়া মনোভাবের পরিচয় দিয়ে চলেছেন। এটা এমন একটা মহামারি যা সহজে নির্মূল হবে না। তবে সব সময় পজিটিভ মনোভাব নিয়ে থাকতে হবে যাতে সহজেই এই সব থেকে বেরিয়ে আসা যায়।’