নাহ বলিউডের সুপারস্টার এই তকমা তার সাথে যায়না। আসলে নায়ক আর অভিনেতার মধ্যে একটা সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে যার জেরেই আলাদা করা যায় সলমান খান, শাহরুখ খানের থেকে নওয়াজউদ্দীন, মনোজ বাজপেয়ীদের। ঠিক তেমনই বড়পর্দার ব্লকবাস্টার সুপারহিট ছবির নায়ক নন পঙ্কজ ত্রিপাঠি (Pankaj Tripathi)। কিন্তু ভারতীয় ওয়েব দুনিয়ায় অন্যতম দুই মাইলস্টোন ‘স্যাক্রেড গেমস’ এবং ‘মির্জাপুর’ এর মতো দুটি জনপ্রিয় সিরিজে নিজের জাত চিনিয়ে দিয়েছেন অভিনেতা। পর্দায় পঙ্কজ ত্রিপাঠির দৃশ্য চললে দর্শকরা ঘন্টার পর ঘন্টা একই জায়গায় বসে থাকতে পারেন।
আজ তাকে চিনেছে গোটা দেশ , কিন্তু ২০০৪ সাল এর আগে তার সংগ্রাম সম্পর্কে কজনই বা জানে ? কোনোও গডফাদারের হাত ধরে তিনি বলিউডে আসেননি ,এসেছেন নিজের চেষ্টায়। এক মুহূর্তের জন্যও টাকার জন্য নিজের অভিনয় সত্ত্বাকে বিক্রি করে দেননি। চরিত্র ছোট হোক বা বড় তিনি দিয়েছেন নিজের বেস্টটাই। আজ তিনি অনেক সফল ,অনেক জনপ্রিয় তবু তারকাদের যে গ্ল্যামার তা পঙ্কজের গায়ে আজও লাগেনি।
আসলে ছেলেবেলা থেকেই অত্যন্ত অভাবে দিন কেটেছে তার। দিন কাটতো আধপেটা খেয়েই। অসুস্থ বাবার চিকিৎসার জন্য টাকা রোজগার করতে মাঠে ময়দানে মেয়ে সেজে নাচ ও দেখিয়েছেন তিনি। আজ হঠাতই জনপ্রিয়তা পেয়ে নিজের এমন সংগ্রামের অতীত কীভাবেই বা ভুলবেন পঙ্কজ। আজও তাই তার মনে প্রশ্ন জাগে ,’মানুষ কী ভাবে এত টাকা কেবল বাহ্যিক চাকচিক্য বানাতে খরচ করে’.
তার কোথায় সুখের সাথে অত্যাধিক অর্থ উপার্জনের কোনও যোগ নেই , দরকারটুকু মিটলেই মানুষ সুখে থাকতে পারে। বিহারের এক পর্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসা পঙ্কজের জীবনে তাই তারকা হওয়ার পরেও বাড়তি চাকচিক্য আসেনি। তার জীবন সংগ্রামে স্ত্রীয়ের ভূমিকা স্বীকার না করে পারেন না পঙ্কজ।
২০০৪ সালে স্বামীর স্বপ্ন ছুঁতেই অজানা অচেনা মুম্বই শহরে এসেছিলেন তিনি। পেশায় তিনি একজন শিক্ষিকা। আজও সংসার তার উপরেই ছেড়ে রেখেছেন পঙ্কজ। পঙ্কজের কথায়, “আমি কোনও দিনই একটা বিলাসবহুল বাড়ি বা দামি গাড়ি কিনতে ঋণ নেব বলে মনে হয় না।”