গতবছর থেকে শুরু হয়ে এপচরেও করোনার প্রকোপ অব্যাহত। বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলে গিয়ে তৃতীয় ঢেউ আসতে চলেছে। তবে প্রথম করোনার ঢেউয়ের জেরে হওয়া দীর্ঘ লকডাউনের কারণে বিপুল সংখ্যক লোক কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন। সেই সমস্ত লোকেদের মধ্যে এখনও ওকেনেই কর্মহীন রয়ে গিয়েছেন। করোনা তাদের কাছ থেকে জীবিকাটুকুও কেড়ে নিয়েছে। আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবারের সকলের অন্য সংস্থান করতে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ছোটদের পড়াশোনা।
অর্থকষ্টে যেখানে দুবেলার খাবার জোগাড় করতে হন্য হয়ে এদিক ওদিক ঘুরতে হচ্ছে। সেখানে পড়াশোনা আর কি করে সম্ভব হবে! এমনকি লকডাউন মিটলে এমনও খবর মিলেছিল যে সংসারের হাল ধরতে গিয়ে মেধাবী ছাত্রকে শেষমেশ সাইকেলে ঘুরে ঘুরে মিষ্টি বিক্রি করতে হচ্ছে। সেই খবর লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা বাংলায়।
আবারো একই রকম একটি খবর মিলছে। নদীয়া জেলার নবদ্বীপের কোলেরডাঙ্গা অঞ্চলের বাসিন্দা পলাশ দেবনাথ। ক্লাস সেভেনের ছাত্র সে। পলাশের বাবা অজয় দেবনাথ লকডাউনের আগে এক মিষ্টির দোকানে কাজ করতেন। কিন্তু লকডাউনের কারণে বাবার কাজ চলে গিয়েছে। লকডাউনে কাজ বন্ধ হলেও পেট তো আর লকডাউন মানে না। তাই পেটের দায়ী সংসারের হাল ধরতে রাস্তায় নেমেছে ছোট্ট পলাশ।
নিজের সাইকেলের পিছনে একটা বক্সের মধ্যে পেপসি আইসক্রিম বিক্রি করতে শুরু করেছে সে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে জল বিস্কুট খেয়ে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পরে পলাশ। সাইকেল নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে পেপসি বিক্রি করছে সে। সারাদিনের যে টুকু টাকা উপার্জন হচ্ছে সেটা তুলে দিচ্ছে বাবার হাতে। এদিকে বাবাও বসে নেই টাকার জন্য আপাতত টোটো চালানো শুরু করেছে পলাশের বাবা।
ছোট বয়সে যেখানে পড়াশোনা ও খেলাধুলার বয়স সেই বয়সে সংসারের হাল ধরতে নেমে পড়েছে ছোট্ট পলাশ। সারাদিন সাইকেল নিয়ে ঘুরে পেপসি ফেরী করছে সে। তাতে যদি কিছুটা টাকা আসে আর সংসারটা ভালোভাবে চালানো যায়। প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের জেরে দীর্ঘ দুবছর যাবৎ প্রায় বন্ধই রয়েছে স্কুল কলেজ। তাই গরিব ঘরে পড়াশোনা যে প্রায় বন্ধ সেটা আলাদা করে বোঝাতে লাগে না।