সাধারণের ভিড়ে কিছু মানুষ থাকেন যাদের দেখে অতিসাধারণ মনে হলেও আসলে তারা মহান। এমনই মানুষকে চিনেছে গোটা দেশ। কমলালেবু (Orange) বিক্রি করে কাটে দিন, যায় বলতে মাত্র ১৫০ টাকা প্রতিদিন। যেখানে বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ১৫০ তাকে কিছুই হয় না সেখানে রোজগারের স্বল্প টাকা বাঁচিয়ে স্কুল তৈরী করে ফেলেছেন তিনি। এবার পদ্মশ্রী (Padma Shri) সম্মানে ভূষিত হলেন হারেকালা হাজব্বা (Harekala Hajabba)।
৬৪ বছর বয়সী হাজব্বা থাকেন ম্যাঙ্গালুরুর নিউপাদাপুত গ্রামে। কমলা লেবু বিক্রি করেই তার দিন কাটে। সারাদিনে মেরেকেটে ১৫০ টাকা মত রোজগার করেন তিনি কমলালেবু বিক্রি করে। আর সেই টাকা থেকেই জমিয়ে জমিয়ে স্কুল তৈরী করে ফেলেছেন তিনি। দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয় এই স্কুলে। রয়েছে মোট ১৭৫ জন ছাত্র ছাত্রী।
নিজের ছোট বেলায় স্কুলে যাননি হাজব্বা। তবে গ্রামের বাকিরা শিক্ষার আলো থেকে দূরে থাকুক সেটাও মেনে নিতে পারেনি সে। তাই গ্রামের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা যাতে শিক্ষার আলো দেখতে পাই তাই জন্যই নিজের কষ্টের টাকা দিয়েই গড়ে তুলেছেন এই স্কুল। এক একর জমির ওপর ২০০০ সালে এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন হাজব্বা। স্কুল তৈরী করে গ্রামের ছোটদের অক্ষর চিনিয়েছেন তিনি। তাই স্থানীয় লোকেরা তাকে ‘অক্ষরা সান্তা’ নামেও চেনেন।
Harekala Hajabba, a fruit-vendor from Karnataka's Mangaluru, who built a school in his village from his earnings, was conferred with the Padma Shri award today pic.twitter.com/t0lOdiOQpd
— ANI (@ANI) November 8, 2021
স্কুল তৈরী করেই থেমে যাননি হাজব্বা। তার ইচ্ছে রয়েছে স্কুলের পর একটি কলেজ তৈরী করার। যাতে গ্রামের ছোটরা স্কুল থেকে বেরিয়ে কলেজের থেকেও শিক্ষা পায় আর সমাজকে আরও উন্নত করে তুলতে সাহায্য করে। এবার নিজের এই মহৎ কাজের জন্যই পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হলেন হারেকালা হাজব্বা।
কিভাবে এই যাত্রার শুরু হয়েছিল জিজ্ঞাসা করে হাজব্বা জানিয়েছেন, ‘একবার কমলা লেবু বিক্রি করার সময় আমায় বিদেশী দম্পতি এসে দাম জিজ্ঞাসা করে। কিন্তু তাঁরা কি বলছে তার কিছুই বুঝতে পারিনি। কারণ আমি টুলু আর বিহারি ভাষা ছাড়া কিছুই জানতাম না। তাই তখনই সিদ্ধান্ত নিই গ্রামের বাকি বাচ্চাদের এই সমস্যার সম্মুখীন হতে দেব না। এরপর ধীরে ধীরে টাকা জমিয়ে এই স্কুল তৈরী করি।