মহামারিকালে বছরের শুরুতেই বাংলা বিনোদন জগতের ছটফটে, হাসিখুশি অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার (Oindrila Sharma) ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার খবর মনখারাপ করে দিয়েছিল সকলের। আর সেই শুরুর দিন থেকেই জীবনের এই কঠিন লড়াইয়ে তাঁর হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছেন তাঁর প্রেমিক তথা সকলের প্রিয় ‘বামাক্ষ্যাপা’ ওরফে সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury)।
প্রতি মাসেই অন্তত একবার হলেও ঐন্দ্রিলার অনুরাগীদের জন্য তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর বর্তমান শারীরিক অবস্থার নানান আপডেট দিয়ে থাকেন। গতকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার ফের একবার ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থার আপডেট জানাতে গিয়ে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছিলেন সব্যসাচী। পোস্টের সাথে একটি ছবি আপলোড করেছিলেন অভিনেতা। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে বাচ্চা মেয়ের মতো সব্যসাচীকে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন ঐন্দ্রিলা।
এদিন সব্যসাচী লিখেছেন, ‘আরো একটা মাস শেষ হলো। আমরা মাঝেমাঝেই মাস গুনি, একটা মাস শেষ হলেই আবার দিন গুনি পরের মাস শেষ হওয়ার। কখনও ডানায় চোট লাগা পাখি দেখেছো? আমি প্রতিনিয়ত দেখি।’ আসলে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুয়ে টিভিতে কাছের বন্ধুদের অভিনয় করতে দেখে কষ্ট হয় ঐন্দ্রিলার। সব্যসাচী জানান ‘আজকাল একটা সিরিয়াল রোজ নিয়ম করে দেখে, সেটা হলো ‘ধূলোকণা’। লালন আর মিমি দিদি হল পছন্দের চরিত্র, মাঝেমধ্যেই শুয়ে শুয়ে মিমি দিদির নকল করে দেখায় আমাকে। ‘
এরপরেই ঐন্দ্রিলার শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়ে সব্যসাচী লেখেন, ‘আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম সার্জারিটাই আসল, সেটা সামলে উঠলে বাকি ট্রিটমেন্টটুকু খুব একটা সমস্যার হবে না। তবে বিষয়টা একেবারেই উল্টে গেছে। সার্জারির পরে যে কেমোথেরাপি দেওয়া হচ্ছে সেটা অনেকটাই বেশি কষ্টের। কিছু কিছু দিন বড়ই কষ্ট পায়, মাঝেমধ্যেই ব্লাড প্রেসার অস্বাভাবিক ভাবে কমে যায়, বিছানা থেকে মাথাই তুলতে পারে না। রক্তের মধ্যেও বিস্তর গোলযোগ দেখা যায় তখন।’সেইসাথে সব্যসাচী জানান অনেক সময় যন্ত্রণা এতটাই বেড়ে যায় যে হাই ডোজের ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কোনোমতে ঘুম পাড়িয়ে রাখতে হয় ঐন্দ্রিলাকে।
সেইসাথে তিনি যোগ করেন, ‘আসলে অসুখটা এতটাই দীর্ঘায়িত যে শুরুতে যে মানুষগুলি উৎকণ্ঠিত থাকেন তারাও আস্তে আস্তে উপেক্ষা করতে শুরু করেন। আর জগতের নিয়ম অনুযায়ী সেটাই খুব স্বাভাবিক বিষয়, সেটা ও নিজেও বোঝে। শরীরটা খারাপ থাকলে মাঝেমধ্যে শিশুর মতন আচরণ করে।’ তবে সব্যসাচী মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন ঐন্দ্রিলা আবার ফিনিক্স পাখির মতোই ফিরে আসবেন। তাই অভিনেতা জানান ‘একদিন ওকে ফিনিক্সের গল্প পড়ে শোনালাম, আমি জানি ছয় বছর আগে যেমন ফিরে এসেছিলো, ঠিক সেইভাবেই আবার ফিরবে। সেই জন্যই তো আমরা দিন গুনি।’