শীতের মরশুম প্রায় এসেই গেছে। আর শীতকাল মানেই বিয়ে বাড়ির শুরু। গত শনিবারেই বিয়ে হয়েছে সরোজের রশ্মিরেখার সাথে। খুবই সাধারণ একটা বিয়ে, তেমন জাঁকজমকের কিছুই ছিল না। তবুও এই বিয়ে গোটা গ্রাম তথা ভারতবাসীর কাছে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনটাই বলেছেন বিয়েতে নিমন্ত্রিত অতিথিরা।
আসলে বিয়ে মানেই নাকি পণ (Dowry)। পাত্রীপক্ষকে মেয়েকে শশুরবাড়ি পাঠাতে হলে পণ নাকি দিতেই হয়। বহুদিন ধরে বহুভাবে সমাজের বিভিন্ন স্টোরে সচেতনতা মূলক প্রচার চালানো হয়েছে এই পণ প্রধার বিরুদ্ধে। আইনত পণ নেওয়া বা দেওয়া অপরাধ। তবুও কিছু পাত্রীর বাড়ির ধারণা পণ না দিলে হয়তো মেয়েকে শান্তিতে ঘর করতে দেবেনা শশুড়বাড়ির লোকেরা। তবে সকলেই যে এই ধারণা নিয়ে রয়েছেন এখনো তা নয়। কিছু পরিবর্তন এসেছে এই গতানুগতিক ভাবে চলতে থাকা ভ্রান্ত ধারণায়।
কিছুদিন আগেই মহারাষ্ট্রের এক বিয়েতে বর পণ হিসাবে নিমন্ত্রিতদের কাছ থেকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার বই চেয়েছিল। পাওনা বই গুলি দিয়ে ওই দম্পতি দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র ছাত্রীদের জন্য একটি লাইব্রেরি বইটি করেছে। যাতে তারা পড়াশোনার মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারে।
এবার এক আজব বিয়ের সাক্ষী থাকল ওডিশার কেন্দ্রপাড়ার বাসিন্দারা। বর হলেন ওড়িশার (Odisha) কেন্দ্রপাড়া জেলার স্কুল শিক্ষক সরোজ কান্ত বিশ্বল। তিনি পণ প্রথার একেবারে বিরোধী, কিন্তু তার শাশুড়ীমা আবার পণ না না দিয়ে ছাড়ার পাত্রী নন। তাদের মতে পণ না দেওয়ার জন্য মেয়েকে শ্বশুড়বাড়িতে গঞ্জনা শুনতে হবে চিরকাল। কিন্তু, সরোজ বাবুতো পণ নেবেন না। শেষে শাশুড়ির জেদে পণ নিতে রাজি হলেন সরোজ। তবে পণ হিসাবে তিনি যা চাইলেন তা শুনে হতবাক শাশুড়ি থেকে নিমন্ত্রিত অতিথি সকলেই।
বিয়েতে পণ হিসাবে বড় চাইলো ১০০১ টি চারা গাছ (Saplings)। সরোজ বাবু প্রকৃতি প্রেমী, ফাঁক পেলেই বনে জঙ্গলে ঘুরতে যান তিনি। তাই চারা গাছেরই আবদার জানালেন শাশুড়ির কাছে। সেই ১০০১ টি চারাগাছ জোগাড় করতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয় শশুড়বাড়ির লোকজনকে। তবে এমন এক বিয়ের কথা ও বিয়ের পণের কথা এখন গ্রামের সকলের মুখে মুখে ঘুরছে। সাথে সাথে এই বিয়ে এখন একটি দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে।