বাঙালি আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছোটবেলা থেকেই এক হয়ে যায়। স্কুলের পাঠ্য বই থেকে বড় হওয়ার পথে গান থেকে গল্প উপন্যাস সর্বত্রই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore) ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে। অথচ সম্প্রতি রবীন্দ্র সংগীতকেই বিকৃত করার চেষ্টা করছেন বাংলাদেশের হিরো আলম (Hero Alom)। যার জেরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। রবি ঠাকুরের গান নিয়ে প্যারোডি তৈরী করা মোটেই ভালো কাজ নয় এই নিয়ে সরব হয়েছেন অনেকেই। এমনকি পুলিশি মামলা হয়েছে হিরো আলমের বিরুদ্ধে। গ্রেফতার পর্যন্ত হয়েছেন তিনি।
এখানেই শেষ নয়, হিরো আলমকে মুচলেখা জমা দিতে হয়েছে যে তিনি রবীন্দ্র সংগীত বা নজরুল গীতি নিয়ে কখনো গান গাইবেন না। এদিকে হিরো আলমকে নিয়ে সমালোচনা নিন্দা হলেও কিছু মানুষ আবার তার পক্ষ নিয়েছেন। বাংলাদেশের অনেকেই হিরো আলমের হয়ে আওয়াজ তুলেছেন। তারই মধ্যে একজন হলেন আরেক বাংলাদেশের গায়ক মইনুল আহসান নোবেল (Mainul Ahsan Noble)।
হ্যাঁ এই সেই নোবেল যিনি সারেগামাপার মঞ্চে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এরপর নিজের গান দিয়ে দর্শক ও শ্রোতাদের মন জয় করেছিলেন। নোবেল হিরো আলমকে যেমন সমর্থন করেছেন তেমনি সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি রীতিমত বিস্ফোরক পোস্টও করেছেন। যা যথেষ্ট অপমানজনক বলেই মনে করছে নেটিজেনরা। কারণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মত একজন ব্যক্তিত্বকে নিয়ে এমন কুরুচিকর কথা মোটেই গ্রাহ্য নয়!
নোবেলের মতে, ‘রবীন্দ্রনাথ-নজরুল তো আর নবী কিংবা দেবতা নয় যে তাদের গান প্যারোডি আকারে গাওয়া যাবে না! যে রবীন্দ্রনাথ এদেশের কবিদের মূল্যায়ন করে যাই নাই তারে নিয়ে যে এদেশে চর্চা হয়, এটাই রবীন্দ্রনাথের জন্য বেশি। তাছাড়া বাংলাদেশের সাহিত্যে যেহেতু রবীন্দ্রনাথের অবদান নিতান্তই কম, বা নেই বললেই চলে। সেক্ষেত্রে তার গান এদেশের কেউ যদি প্যারোডি আকারে গায় সেটা রবীন্দ্রনাথের জন্যই মঙ্গলজনক।’
এমন একটা পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করার পরে তা মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে পড়ে। নেটিজেনরা একপ্রকার ধুয়ে দিয়েছেন নোবেলকে। সাথে হিরো আলমের পর তাঁর বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আওয়াজ তুলেছেন তারা। এখানেই শেষ নয়, কমেন্ট বক্সে নোবেলকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে কটাক্ষ করে তাঁর সুস্থতাও কামনা করেছেন অনেকে।
প্রসঙ্গত, ‘আমার পরাণ যাহা চায়’ এই গানটির দুলাইন গেয়ে মিউজিক ভিডিও বানিয়েছিলেন হিরো আলম। গানটি রিলিজের পরেই তীব্র কটাক্ষ চলতে থাকে। যদিও তিনি নিজেই জানিয়েছিলেন সবার গান করার অধিকার আছে সেই থেকেই তিনি গান করেছেন। এর জেরে পরবর্তীকালে আইনি নোটিশ ও মামলা হয় আর আর কোনোদিন এই ধরণের গান গাইবেন না এমন মুচলেখা দিতে হয় তাকে।