বাড়িতে বাচ্চা থাকলে যেমন গোটা বাড়িটা একেবারে গমগম করে, তেমনটাই হয়ে থাকে বাংলা সিরিয়াল গুলির ক্ষেত্রেও। তাই ইদানিং বেশিরভাগ সিরিয়ালে নায়ক-নায়িকা কিংবা খল চরিত্রের পাশাপাশি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে শিশু শিল্পীদের। তারাই এখন হয়ে উঠেছে প্রত্যেকটি সিরিয়ালের আকর্ষণের অন্যতম মূল কেন্দ্রবিন্দু। স্টার জলসার ‘অনুরাগের ছোঁয়া’ থেকে শুরু করে ‘পঞ্চমী’ অথবা ‘হরগৌরী পাইলস হোটেল’ কিংবা জি বাংলার ‘মিঠাই’, ‘জগদ্ধাত্রী’-র মত একাধিক সিরিয়ালেই এখন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে এই সিরিয়ালের শিশু শিল্পীদেরও।
তাই প্রতিদিন টিভির পর্দায় এই খুদে সদস্যদের না দেখা পর্যন্ত গোটা দিনটাই যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায় সিরিয়ালপ্রেমী দর্শকদের। তাই সিরিয়ালে তাদের গুরুত্বের কথা ভেবেই এখন প্রতিদিন ৯ ঘন্টা অভিনয় করতে হয় এই শিশু শিল্পীদের। যার ফলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের ফুলের কুঁড়ির মতো সদ্য প্রস্ফুটিত শৈশবের। যার প্রভাব পড়ছে পড়াশোনাতেও।
আসলে টানা ৯ ঘন্টা শুটিং চলার ফলে সিরিয়ালের সেটেই বাচ্চাদের পড়াশুনা থেকে খেলাধুলো করতে হয় সবটাই। তাই শিশু শিল্পীদের অভিনয়ের উপর এক কড়া নির্দেশিকা জারি করেছে ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস (National Commision For Protection Of Child Rights)।
অল্প বয়সী শিশু শিল্পীদের দিয়ে দিনভর অভিনয় করনের বিরোধিতা করে এই সংগঠনের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে ‘এবার থেকে দিনে ৯ ঘণ্টার বেশি শিশু শিল্পীদের দিয়ে অভিনয় করানো যাবে না। শুধু তাই নয়, সেই সাথে তিন ঘন্টা শুটিংয়ের পর শিশুশিল্পীকে প্রয়োজনীয় বিরতি দিতেই হবে।
এছাড়াও খেয়াল রাখতে হবে শুটিং চলাকালীন বড়দের মাঝে থাকার সময় শিশুরা যাতে অনুপযুক্ত কোন কিছু না শেখে। এছাড়া জানানো হয়েছে শিশুদের মনের ওপর প্রভাব ফেলে এমন কোন কনটেন্ট তাদের দেওয়া যাবে না। কাজেই বোঝা যাচ্ছে নতুন নির্দেশিকা জারি হওয়ার পর বাংলা সিরিয়ালের ইন্ডাস্ট্রিতে এক বিরাট পরিবর্তন আসতে চলেছে।
এর প্রভাবও পড়তে পারে বাংলা সিরিয়াল গুলির ওপর। বিশেষ করে এই মুহূর্তে বাংলার অন্যতম সেরা সিরিয়াল অনুরাগের ছোঁয়ার মূল আকর্ষণই হল দুই মিষ্টি মেয়ে সোনা-রুপা। তাই নতুন নিয়মের ফলে এই সিরিয়ালে কোন পরিবর্তন আসে কিনা সেটাই এখন দেখার।