বাংলা বিনোদন জগতে (Bengali Film Industry) এমন অনেক তারকা রয়েছেন যারা সময় অসময় সমৃদ্ধ করেছেন ইন্ডাস্ট্রিকে। আর দর্শকদের জন্য উপহার দিয়েছেন দুর্দান্ত সমস্ত সিনেমা থেকে টেলিভিশন সিরিয়াল। এমনই একজন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেতা মৃণাল মুখোপাধ্যায় (Mrinal Mukherjee)। মূলত খলনায়কের চরিত্রেই বারবার দেখা গিয়েছে তাকে, তবে ইতিবাচক চরিত্রেও তাঁর অভিনয় যথেষ্ট সাবলীল। কিন্তু এমন একজন প্রতিভাবান অভিনেতা হলেও প্রাপ্য সন্মান টুকুই পাওয়া হয়নি, আক্ষেপের সুরেই জানালেন মৃণাল কন্যা জোজো (Jojo)।
বাংলা চলচ্চিত্র জগতে যেমন রুপোলি পর্দায় দর্শকদের বিনোদন জুগিয়েছেন তিনি, তেমনি ছোটপর্দাতেও দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন।বড়পর্দা ও ছোটপর্দা দুদিকটাই সামলেছিলেন একসাথে। তবে যতবারই তাকে পর্দায় দেখা গিয়েছে দর্শকেরা প্রশংসায় ভরিয়েছিলেন। কিন্তু এতো সফল অভিনেতা হয়েও নিজের প্রাপ্য সন্মানটুকি পাননি তিনি।
এমন একজন অভিনেতা আজ আর আমাদের মধ্যে নেই। বিগত ৭ই মে ছিল অভিনেতা মৃণাল মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু বার্ষিকী, দেখতে দেখতে তিন বছর হয়ে গিয়েছি অভিনেতা আমাদের ছেড়ে চলে গিয়েছেন। এদিন ইন্ডাস্ট্রির তরফ থেকে বাবাকে প্রাপ্যটা দেওয়া হয়নি বলে আক্ষেপ করলেন মৃণালকন্যা তথা গায়িকা জোজো।
আসলে মৃণাল মুখোপাধ্যায় বরাবরই একটু পুরোনো ধ্যান ধারণার মানুষ ছিলেন। কাজ ভালোবাসতেন ঠিকই তবে নিজের প্রচার পছন্দ করতেন না। এদিন জোজো জানান, ‘বাবা আসলে পুরোনো দিনে মানুষ, কাজটাই ছিল সব। কাজের জন্য যেটুকু প্রচার হয়েছে সেটুকুই, তাছাড়া বাইরে আলাদা করে নিজে কোনোদিন প্রচার করেননি’।
এরপর গায়িকা আরও জানান, বাবা আসলে খুব চাপা স্বভাবের মানুষ ছিলেন। মেয়ের সাথে পর্যন্ত নিজের ভালো লাগা, খারাপ লাগা গুলো ভাগ করতেন না। জীবনের শেষ পর্যন্ত কাজ করতে চেয়েছিলেন তিনি। শেষ শুটিংয়ের সময়েও নিজের অসুস্থতার কথা বুঝতে দেননি কাউকে। শেষ জীবনে দীর্ঘদিন শারীরিক অসুস্স্থতায় ভুগেছিলেন তিনি। তারপর ২০১৯ সালের ৭ই মে প্রয়াত হন।
এদিন জোজো বলেন, আমাকে নিজের শিক্ষায় বড় করে তুলতে চেয়েছিলেন বাবা। বলতেন খ্যাতির আসা না রেখে শুধু নিজের কাজে মন দাও। মা বাবা দুজনেই ভালো গান গাইতেন, তাদের থেকেই ছোটবেলায় সংগীত চর্চা শুরু হয়। পুরাতনী গান খুব ভালোবাসতেন বাবা। চেয়েছিলেন আরও কিছুটা শিখুক মেয়ে। কিন্তু আক্ষেপ সেটা আর হল না। তার আগেই চলে গেলেন বাবা।
আসলে বাবা যে এভাবে চলে যাবেন সেটা ভাবতেও পারেননি জোজো। তিনি বলেন, বাবা থাকলে লকডাউনে আরও অনেক কিছু শেখ হয়ে যেত। পাশাপাশি জোজো আক্ষেপের শুরে বলেন অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েও বাবা প্রাপ্য সন্মান পাননি। কারণ যে সময় বাবা পুরস্কৃত হয়েছিলেন সেই সময় সংবাদ মাধ্যম এতটা সক্রিয় ছিল না। তাই সেভাবে প্রচারে আসেননি।