কয়েকদিন আগেই প্রেক্ষাগৃহে রিলিজ করেছে ‘রামায়ণ’ (Ramayan) অবলম্বনে তৈরি হওয়া সিনেমা ‘আদিপুরুষ’ (Adipurush)। প্রভাস, কৃতি শ্যানন, সইফ আলি খান অভিনীত এই ছবি মুক্তির পর থেকে শুরু হয়েছে নানান বিতর্ক। দর্শকদের একাংশের অভিযোগ, রামায়ণের তথ্য বিকৃত করে দেখানো হয়েছে ওম রাউত পরিচালিত এই সিনেমায়। এই সকল বিতর্কের মাঝেই সীতার প্রকৃত জন্মস্থান (Sita’s Birth Place) কোথায় তা নিয়েও শুরু হয়েছে চর্চা।
রামায়ণ অনুযায়ী, বিদেহ রাজ্যের জনকপুরের রাজা জনকের মেয়ে ছিলেন সীতা। এই বিদেহ রাজ্যের অবস্থান ঠিক কোথায় তা নিয়ে হাজার বিতর্ক রয়েছে। ভারত (India)-নেপাল (Nepal) আলাদা হয়ে যাওয়ার পর এই বিতর্ক আরও বেড়েছে। পুরাণ (Mythology) অনুযায়ী, এই রাজ্যের অবস্থান নিয়ে মতবিরোধ দেখা যায়। একাংশের দাবি, এই রাজ্য নেপালের জনকপুরে অবস্থিত। দ্বিতীয়াংশের আবার মত, বিহারের মধুবনী জেলার বালিরাজগড়ে অবস্থিত।
এছাড়া বিদেহ রাজ্যের অপর নাম হল মিথির। সেখানকার ভাষার নাম ছিল মৈথিলী। এখনও বিহার এবং নেপালের বেশ কিছু মানুষ এই মৈথিলী ভাষায় কথা বলেন। কারোর মতে আবার, নিমি সহ নেপালের সকল রাজারাই ‘জনক’ নামে পরিচিত ছিল।
ওদিকে আবার শ্রীরামের স্বয়ম্ভর সভায় এসে রাজা জনক যেখানে থেকে সীতাকে কুড়িয়ে পাওয়ার কথা বলেছিলেন, অনেকের মতে সেই স্থান হল এখনকার বিহারের সীতামারহী। কেউ কেউ আবার এও মনে করেন, সীতাকে বিয়ে করার জন্য রামচন্দ্র যেখানে হরধনু ভঙ্গ করেছিলেন সেটি এখন নেপালের রঙ্গভূমি নামে পরিচিত। এত বিতর্কের কারণে আজও সীতার জন্মস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছে।
নেপালের মানুষের অবশ্য দৃঢ় বিশ্বাস সীতা তাঁদের দেশের মেয়ে ছিলেন। নেপালের জনকপুরের জন্ম হয়েছিল তাঁর। তবে ওম রাউতের ‘আদিপুরুষ’এ সীতাকে ভারতের মেয়ে বলে দাবি করা হয়েছে। সেই জন্য এই ছবি মুক্তির দু’দিনের মাথায় কাঠমান্ডুর মেয়র নেপালের সব বলিউড সিনেমা নিষিদ্ধ করে দেন।
এই ঘটনার পর টি-সিরিজের তরফ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, অজান্তে নেপালের মানুষের ভাবনায় যদি কোনও আঘাত করে থাকি তাহলে আমরা দুঃখিত। আমরা সেই জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এই ভুল ‘অজান্তে’ হয়েছে বলে দাবি করেছেন টি-সিরিজ কর্তৃপক্ষ। যদিও এই বিষয়ে নেপালের তরফ থেকে কোনও পাল্টা বার্তা দেওয়া হয়নি। নিষেধাজ্ঞা তোলা হবে কিনা তাও এখনও স্পষ্ট নয়।