ভারতীয় বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। খাঁটি হীরে তিনি। নিজের অভিনয় প্রতিভার মাধ্যমে জয় করে নিয়েছেন কোটি কোটি মানুষের মন। শ্যামবর্ণ চেহারার এই অভিনেতাকে নিজের চেহারার জন্য কেরিয়ারের শুরুতে প্রচুর কটাক্ষ শুনতে হয়েছে। অনেক চলচ্চিত্র নির্মাতা রিজেক্টও করেছেন তাঁকে। তবে কালো গায়ের রঙের জন্যই বদলে গিয়েছিল ‘মহাগুরু’র জীবন। সৌজন্যে ছিলেন মৃণাল সেন।
এদেশের সর্বকালের সেরা পরিচালকদের মধ্যে একজন হলেন মৃণাল সেন (Mrinal Sen)। প্রচুর আইকনিক সিনেমা পরিচালনা করেছেন তিনি। এমনই একটি ছবি হল ‘মৃগয়া’ (Mrigaya)। ১৯৭৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমায় মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মিঠুন। জাতীয় পুরস্কারও এসেছিল অভিনেতার ঝুলিতে। এরপর ১৯৮২ সালে ‘ডিস্কো ডান্সার’ ছবিতে অভিনয় করার পর বদলে যায় এই বঙ্গ তনয়ের ভাগ্য।
এখনকার সময়ে মিঠুন চক্রবর্তী এদেশে বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির অত্যন্ত বড় একটি নাম। তবে কেরিয়ারের শুরুতে আসেনি এই সাফল্য। মৃণাল সেন যদি ‘মৃগয়া’য় তাঁকে সুযোগ না দিতেন, তাহলে আজ এই স্থানে নাও থাকতে পারতেন তিনি। সেই জন্যই তো জীবনের প্রথম পরিচালককে আজও ভুলতে পারেননি মিঠুন। সেই জন্য পরিচালকের জন্মদিনে অভিনেতা ফিরে যান অতীতের স্মৃতিতে।
মিঠুন জানান, তাঁর গায়ের রঙ কোনও দিনই খুব একটা উজ্জ্বল ছিল না। সেই জন্য হীনমন্যতায় ভুগতেন। তিনি মনে করতেন, সুন্দর দেখতে ফর্সা নায়কদের টেক্কা দিয়ে বলিউডে প্রতিষ্ঠিত হওয়া একেবারেই সহজ নয়। সেই জন্য তিনি খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করবেন বলেও ঠিক করে নিয়েছিলেন। অভিনেতার কথায়, ‘গায়ের রঙ নিয়ে আমার মধ্যে হীনমন্যতা কাজ করতো। আমি ভেবেছিলাম, গায়ের রঙ তো আমি বদলাতে পারব না, তবে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করতেই পারি। আমি ফিল্ম ইনস্টিটিউটে যাই, সেখান থেকে খুব ভালো করে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরে আসি’।
‘মহাগুরু’র সংযোজন, ‘আমি ভেবেছিলাম, আমি ভালো নাচতে পারি, অ্যাকশন দৃশ্যেও সাবলীল। তাই চেয়েছিলাম, দর্শক আমার গায়ের রঙ না দেখে এই গুণগুলো দেখুক। সেটাই করেছিলাম। নিজস্ব একটা নাচের স্টাইল তৈরি করি’।
তবে মৃণাল সেনের ‘মৃগয়া’ একেবারেই নাচগানের ছবি ছিল না। সেই সিনেমায় মিঠুনের শ্যামলা গায়ের রঙেরই দরকার ছিল। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তাই মজার ছলে অভিনেতা বলেন, ‘মৃণালদা আমায় ছবিতে নিয়েছিলেন, কারণ আমায় দেখে একেবারে যথার্থ আদিবাসী মনে হতো’।