আমরা প্রায়শয়ই শুনে থাকি বিদেশে গেলেই যে কোনও মানুষের ‘দর’ বেড়ে যায়। তবে কথাটি যে বাঙালির আবেগের সঙ্গে জড়িত ‘হনুমান টুপি’র (Monkey Cap) ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য তা কে জানত! প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে আপামর বাঙালিকে শীতের হাত থেকে বাঁচিয়েছে যে হনুমান টুপি, বিদেশে গিয়ে তার দামই আকাশ ছুঁয়েছে। সাধের, আবেগের মাঙ্কি ক্যাপ বিদেশে গিয়ে নিজের ‘দর’ বাড়িয়ে নেওয়ায় গর্বে বুক ফুলে উঠেছে বাঙালিরও!
এই হনুমান টুপি পরে এত বছর কলকাতার ঠাণ্ডার পাশাপাশি দার্জিলিং, দিল্লি, কাশ্মীরের ঠাণ্ডাকে হার মানিয়েছে অধিকাংশ বাঙালি। এমনকি এই টুপির জন্য মাঝেমধ্যে হাসিঠাট্টার শিকারও হয়েছেন অনেকে। হনুমান টুপির কদর তখন কেউ কদর করেনি! কিন্তু এখন বিশ্বজোরা ‘সুনাম’ তার। বিদেশে মোটা টাকায় বিক্রি হচ্ছে সে। এক বিশ্বমানের ফ্যাশান ব্র্যান্ড এখন হনুমান টুপি তৈরিতে মন দিয়েছে!
বিখ্যাত ফ্যশান ব্র্যান্ড ডোলচে অ্যান্ড গাব্বানার (Dolce & Gabbana) নাম হয়তো অনেকেই শুনেছেন। জনপ্রিয় তারকারা এই ব্র্যান্ডের জামা, জুতো থেকে শুরু করে ঘড়ি পরেন। এবার এই ব্র্যান্ডই হনুমান টুপি তৈরি করছে। বাঙালির গর্ব হওয়া তো খুবই স্বাভাবিক!
তবে ডোলচে অ্যান্ড গাব্বানার হনুমান টুপি তৈরি করা দেখে বাঙালি যত না বেশি অবাক হয়েছে তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছে সেই টুপির দাম দেখে। এই ব্র্যান্ডের অনলাইন স্টোরে প্রায় ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে একটি হনুমান টুপি। তবে ছাড় দেওয়ার পর সেই দাম কিছুটা কমেছে। ছাড়ের পর একটি টুপির দাম এসে দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৯৯০ টাকায়। যদি কেউ একসঙ্গে সম্পূর্ণ টাকা না দিতে পারেন তাহলেও অসুবিধা নেই। ১৭৭৮ টাকা ইএমআই দিয়েও কেনা যাবে এই ‘মহার্ঘ’ হনুমান টুপি।
দার্জিলিংয়ে ঘুরতে গেলে ভুটিয়াবাজার থেকে বাঙালিরা দরদাম করে ৮০ টাকাতেও হনুমান টুপি কেনে। বড় দোকানে আসলে সেই টুপির দাম বাড়ে। তা দাঁড়ায় ৩০০-৪০০ টাকায়। অনলাইনে সেটি ৭০০-৮০০ টাকাতেও বিক্রি হয়। কিন্তু তাই বলে একেবারে ৪০ হাজার টাকা!
যদিও ডোলচে অ্যান্ড গাব্বানা বাঙালির গর্বের হনুমান টুপিকে কিন্তু ‘মাঙ্কি ক্যাপ’ নামে বিক্রি করছে না। ওই টুপির নাম রাখা হয়েছে ‘খাকি স্কি মাস্ক ক্যাপ’। যা দেখার পর একজন বাঙালি নেটিজেনের প্রতিক্রিয়া, ‘স্কি ক্যাপ!!! কচু পোড়া। ওটা আমাদের হনুমান টুপি, আর তার জন্য ৩২ হাজার টাকা? বাবা গো…’।