সুরের সম্রাজ্ঞী তিনি, গত ৭ দশক ধরে তার বিকল্প এই দেশে মেলেনি তিনি লতা মঙ্গেশকর। বয়স ৯০ এর কোঠায় তবুও তিনি গান ধরলে প্রাণে আরাম হয়, শান্তিতে চোখ বুজে আসে। এতটাই দরদ তার কন্ঠে। মাত্র ৫ বছর বয়স থেকেই গান গাইছেন তিনি। ছোট থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় কয়েক হাজার গান গেয়েছেন তিনি। এই বর্ষীয়ান গায়িকা বাংলা, হিন্দি থেকে শুরু করে একাধিক ভাষায় গান গেয়েছেন।
ছোট্ট বয়স থেকেই তার ধ্যান জ্ঞান কেবলমাত্র গান। তাবড় তাবড় সঙ্গীত পরিচালকদের সাথে কাজ করেছেন লতাজি। অসংখ্য প্রেম বিরহের গান গাইলেও ব্যক্তিগত জীবনে কোনোদিন বিয়ে করেননি লতা। জানা যায় লতাজি প্রেমে পড়েছিলেন ঠিকই, তবে সেটা ছিল অসমাপ্ত প্রেম। জানা যায় ডুঙ্গারপুর রাজপরিবারের মহারাজা রাজ সিংকে ভালোবাসতেন লতা মঙ্গেশকর। কিন্তু রাজ সিং মা বাবার কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন যে সাধারণ মেয়েকে রাজ পরিবারের পুত্রবধূ করবেন না।
মা-বাবাকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিজের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত রক্ষা করেছেন রাজ সিং। রাজা যেমন নিজের কর্তব্য পালন করেছিলেন তেমনি লতাজিও নিজের পরিবারের প্রতি দায়িত্ববান ছিলেন। নিজের ছোট বোনেদের মানুষ করার দায়িত্ব ছিল লতাজির ওপরেই। তাই পরিবারের স্বার্থেই আজও অবিবাহিত রয়ে গিয়েছেন গায়িকা। রাজ সিং বা লতা মঙ্গেশকর দুজনের কেউই বিয়ে করেননি। আজ সেই সাধারণ মেয়েই গোটা দেশের গর্ব।
প্রথম জীবনের কথা বলতে গেলে বেশ অভাবেই কেটেছে লতার ছোটবেলা। গায়িকার প্রথম উপার্জন ছিল মাত্র ২৫ টাকা। বাবা ছিলেন সামান্য একজন নাট্য কর্মী। ১৯৪৪ সালে মারাঠি ছবি কিটি হাসালের জন্য প্রথম গান গেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু আজ এই লতা মঙ্গেশকরের সম্পত্তির পরিমাণ শুনলে চমকে যাবেন।
বর্তমানে প্রায় ৫০ মিলিয়ন সম্পত্তি বা ৩৬৮ কোটি টাকার মালকিন লতা মঙ্গেশকর। দক্ষিণ মুম্বইয়ে বিলাসবহুল প্রাসাদে থাকেন তিনি। এই বয়সেও তার গাড়ির খুব শখ। তার একাধিক দামি দামি গাড়ির সম্ভার রয়েছে। ২০০৭ সালে অফিসার অফ দা লিজিয়ন অব অনার, পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, পদ্মভূষণ, দাদাসাহেব ফালকে, পদ্মবিভূষণ, মহারাষ্ট্র ভূষন পুরস্কার সহ একাদিক সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন তিনি।