ভারতের সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের (Lata Mangehkar) কোকিলের মতো কন্ঠ আজও বিস্ময় গোটা দুনিয়ার কাছে। আজ দেখতে দেখতে একসপ্তাহ পার, সরস্বতী পুজোর ভাসানের দিনেই অর্থাৎ রবিবার সাতসকালে প্রয়াত হয়েছেন ভারতীয় নাইটেঙ্গেল লতা মঙ্গেশকর। সেদিন সন্ধ্যাতেই মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে এই কিংবদন্তি গায়িকার উল্লেখ্য নিজের সঙ্গীত জীবনে প্রায় সাত দশক ধরে রাজত্ব করেছেন ভারতরত্ন প্রাপ্ত এই বর্ষীয়ান গায়িকা।
প্রিয় লতাজি আজ আমাদের মধ্যে সশরীরে নেই ঠিকই, কিন্তু তাঁর গান চিরন্তন,শাশ্বত। তাই মৃত্যুর পর তিনি যেখানেই থাকুন না কেন, গানের মধ্যে দিয়েই চিরকাল জীবিত থেকে যাবেন কোটি মানুষের হৃদয়ে। তবে বিগত কয়েকদিন ধরে লতাজির জীবনের নানান অজানা দিক উঠে এসেছে বিভিন্ন মাধ্যমে। উল্লেখ্য চিরকাল লতাজি এবং তাঁর বোন আশা ভোঁসলে (Asha Bhonsle)-র ব্যাক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলছেন।
কিন্তু সমস্ত জল্পনা ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে একবার এক সাক্ষাৎকারে লতাজি বলেছিলেন ‘আমি আর আশা খুব ঘনিষ্ঠ। আমি জানি অনেকের হয়তো বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে। কিন্তু এটাই সত্যি। হ্যাঁ আমাদের মধ্যে কিছু সমস্যা ছিল অতীতে? কোন ভাই-বোনের মধ্যে না থাকে? ও অল্প বয়সে এমন কিছু করেছিল যা আমি মেনে নিতে পারিনি।’জানা যায় একসময় এই বোনের জন্যই অর্থাৎ আশাজির জন্যই মাত্র একদিনেই স্কুল ছেড়েছিলেন লতাজি। ছোট বোন আশা ভোঁসলেকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম দিন স্কুলে গিয়েছিলেন। তখন আশা ভোঁসলের বয়স ছিল মাত্র দশ মাস। স্কুলের শিক্ষক এতে আপত্তি জানিয়েছিলেন। এরপরই আর রাগ করে স্কুল মুখো হননি সুর সম্রাজ্ঞী।
এপ্রসঙ্গে লতা মঙ্গেশকরের আত্মজীবনী ‘লতা মঙ্গেশকর: ইন হার ওন ভয়েস’-এর একজায়গায় লতাজি জানিয়েছিলেন, ‘আশার বয়স তখন প্রায় ১০ মাস। আমি ওকে কোলে করে আমার স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলাম। ক্লাসে ঢুকে আশাকে কোলে নিয়ে বসলাম। শিক্ষক দৃঢ়ভাবে বললেন: ‘এখানে শিশুদের প্রবেশ নিষেধ।’ খুব রাগ করে উঠে পড়েছিলাম। আশাকে কোলে নিয়ে চলে এসেছিলাম, আর ফিরে যাইনি’।
তাতে অবশ্য শিক্ষা লাভ থেমে থাকেনি সুর সম্রাজ্ঞীর। জানা যায় বাড়ির পরিচারিকার কাছ থেকে মারাঠি বর্ণমালা শিখেছিলেন তিনি। এছাড়াও পরবর্তীতে তুতো বোন ইন্দিরার কাছ থেকে এবং পরে লেখরাজ শর্মা নামে বম্বেতে এক ব্যক্তির কাছ থেকে হিন্দি শিখেছিলেন। এরপর তিনি উর্দু, বাংলা এবং কিছুটা পঞ্জাবি শিখেছিলেন। তিনি তামিলও শেখার চেষ্টা করেছিলেন এবং সংস্কৃতও বুঝতে পারতেন।