দেশের কিংবদন্তি গায়ক কিশোর কুমার (Kishore Kumar) আর ‘বিস্ময়’ শব্দটা প্রকৃত অর্থেই একে অপরের পরিপূরক। আজ তাঁর ৯২ তম জন্মবার্ষিকীর দিনে দাঁড়িয়ে একথা একবাক্যে স্বীকার করবেন যে কেউ। তাই মৃত্যুর এত বছর পরেও অসংখ্য মানুষের মধ্যে আজও উজ্জ্বল তাঁর উপস্থিতি। গানের কথার মতোই বাস্তবেই অমর শিল্পী কিশোর কুমার। শুধু সাধারণ মানুষই নয় অসংখ্য বিখ্যাত গায়ক গায়য়িকারাও তাঁর গায়িকির অন্ধ ভক্ত। কিশোর কুমার ভক্ত এমনই একজন জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী হলেন কুমার শানু (Kumar Sanu)।
তাঁর কাছে কিশোর কুমারই হলেন তাঁর গানের গুরু। তবে আজকের এই বিশেষ দিনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে প্রথমে ভাষা হারিয়ে ফেলেন এই বিখ্যাত সংঙ্গীত শিল্পী। তাঁর কথায় ‘কেমন যেন ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। খুব কাছের কাউকে নিয়ে লিখতে গেলে বোধ হয় এমনই হয়।’ কোনো রকম প্রশিক্ষণ না থাকলেও কিশোর কুমারের গান শুনেই একসময় গায়ক হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন কুমার শানু।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন ‘জীবনে যত বার ভেঙেছি, ওই মানুষটাই যেন এক বুক সাহস নিয়ে এসেছেন আমার সামনে।সেই সাহসকে সম্বল করেই আজ থেকে অনেক বছর আগে এসেছিলাম মুম্বইতে। গানের বিশেষ কোনও প্রশিক্ষণ না পেয়েও স্বপ্ন দেখেছিলাম গায়ক হওয়ার। মনে কিশোরদা ছিলেন বলেই হয়তো স্বপ্ন দেখার সাহসটুকু করেছিলাম।’ আর শুনতে অবাক লাগলেও সেই কিশোর কুমারের সাথেই পরে তুলনা হতে শুরু করে কুমার শানুর। শুরু থেকেই নাকি কিশোর কুমারের ক্লোন বলা হত কুমার শানুকে।
তবে এই তুলনা কখনও খারাপ লাগেনি কুমার শানুরও। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেছেন ‘বহু বছর আগের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। তখন চোখে গায়ক হওয়ার স্বপ্ন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কিশোরদার গান গাইতাম। অনেকেই বলতেন, তাঁর সঙ্গে আমার গলা মিলে যায়। সেটা শুনে বেশ লাগত তখন। এর পর সময় গড়িয়েছে। মঞ্চ থেকে প্লে ব্যাকের স্টুডিয়োতে গিয়েছি। জীবনের প্রত্যেকটি ধাপে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে কিশোরদা। কিশোর কুমারের সাথে এই তুলনা আমার কখনও খারাপ লাগেনি। আমি কিশোরদার পদাঙ্ক অনুসরণ করেছি। তাঁর সঙ্গে তুলনা আমাকে অনেকটা এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।’
তবে তাঁর একটাই আফসোস ‘যে মানুষটা স্বপ্ন দেখতে শেখালেন, তাঁর সঙ্গেই সাক্ষাতের সুযোগ হল না কখনও। জীবনের বহু সাফল্য এই আফসোস মুছে দিতে পারেনি। পারবেও না।’ সবশেষে কিশোর কুমার সম্পর্কে কুমার শানু বলেন ‘আমার কাছে কিশোর কুমার এক বিস্ময়ের নাম। যাঁর আভাস পাওয়া গিয়েছিল ছোটবেলায়।’