গান ভালোবাসে অথচ কেকে’র (KK) গান শোনেননি এমন মানুষ বোধহয় পাওয়া অসম্ভব। সেই নব্বইয়ের দশক থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত একাধিক দুর্দান্ত গান উপহার দিয়েছেন কেকে তথা কৃষ্ণকুমার কুন্নাত (Krishnakumar Kunnath)। সেই সমস্ত গান সুখ দুঃখ থেকে শুরু করে সব রকম সময় এর সঙ্গী হয়েছে শ্রোতাদের। দিনেও কলকাতা এসেছিলেন নিজের অসংখ্য শ্রোতাদেরগানের জাদুতে মুগ্ধ করতে। কিন্তু এভাবে যেতিনি সকলকে কাঁদিয়ে চলেযাবেন সেটা হয়তো কেউ ভাবতেও পারেনি।
তবে, শুধুই যে প্রেমের গান গিয়েছেন তা কিন্তু নয়। বাস্তবেও গায়কের প্রেমকাহিনী ছিল দারুন। ৩০ বছর আগে জ্যোতি কৃষ্ণাকে (Jyoti Krishna) বিয়ে করেছিলেন গায়ক। তবে আজ তিন দশক সুধী দাম্পত্যের পর কলকাতায় এসে হারিয়ে যাবেন স্বামী এটা কল্পনাও করতে পারেননি স্ত্রী জ্যোতি। স্বামীর মৃত্যুর পরেই টিভি রীতিমত কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। আজ বংট্রেন্ডের পর্দায় কেকে ও তার স্ত্রী জ্যোতির প্রেমকাহিনী (KK Jyoti love story) সম্পর্কের কিছু কথা তুলে ধরব আপনাদের জন্য।
আগেই বলেছি, আজ থেকে ৩০ বছর আগে বিয়ে করেছিলেন কেকে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন বর্তমান সময়ে যেখানে বছরভরও থেকে না সম্পর্ক সেখানে জীবনসঙ্গীর ওপর বিশ্বাস ও সম্পর্কের প্রতি সম্মানের জন্যই তাদের বিয়ে টিকেছে এত সুন্দরভাবে। ছোট বেলা থেকে যাকে ভালো বসবে তাকে নিয়েই যে সারাটা জীবন কাটিয়ে দেওয়া যায় সেটাই প্রমাণ করেছেন কেকে।
তবে বর্তমানে জনপ্রিয় গায়ক হলেও শুরুটা এত মসৃণ ছিল না। একসময় যখন গায়ক হওয়ার জন্য স্ট্রাগল করছিলেন কেকে তখন প্রেমিকা জ্যোতির বিয়ের ঠিক হয়েছিল। এমন পরিস্থিতি হাজারো প্রেমিকযুগলের সাথেই হয়। তবে কেকের প্রতিষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন ও পাশে দাঁড়িয়েছিলেন জ্যোতি।
১৯৯১ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েন কেকে ও জ্যোতি। কিন্তু সেই সময় তেমন কোনো কাজ ছিল না কেকের। এদিকে কাজ না করলে বিয়ে করবেন না ঠিক করেছিলেন তিনি। তাই একসময় বাধ্য হয়ে সেলসম্যানের চাকরি করতে হয়েছে গায়ককে বিয়ের জন্য। নিজেই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন এই কথা। তবে সেই চাকরি বেশিদিন করেননি, ৩ মাসেই সেলসের চাকরি ছেড়ে দিতে হয়েছিল।
এরপর বেশ কিছু বছর স্ট্রাগলিংয়ের পর ১৯৯৯ সালে কেকের প্রথম অ্যালবাম রিলিজ হয়। সেই যে সুরেলা সফর শুরু হল তা আজও অব্যাহত, আর তাঁর প্রয়াণের পরেও অব্যাহত থাকবে যুগ যুগান্তর ধরে। নব্বইয়ের দশকের প্রথম অ্যালবামের গানগুলি আজও সমান জনপ্রিয়। সবশেষে একথা বলাই যায় যে, প্রেম হয়তো অনেকেই করে। কিন্তু প্রেমিকের প্রতি বিশ্বাস রেখে অপেক্ষা ও তাঁর পাশে দাঁড়ানো আর শেষমেশ একটা সুখী সংসার করাটা সবার হয় না। কিন্তু এটা কেকে ও জ্যোতির প্রেমকাহিনী করে দেখিয়েছে।