প্রকৃতির অনবদ্য ও সুন্দর সৃষ্টি হল ফুল (Flower)। সুখে, দুঃখে, পুজোয় ভালোবাসায় সবেতেই ফুলের মহত্ব রয়েছেই। আর ফুল ভালোবাসে না এমন মানুষ এ পৃথিবীতে হয়তো খুঁজে পাওয়া দুষ্কর! আর ফুলের সাথে প্রকৃতির একটা গাঢ় যোগসূত্র রয়েছে যেটা দেখলে সত্যি মন ভালো হয়ে যায়। আর এই ওপর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার জন্য ভ্রমণপিপাসু মানুষেরা ছুটে যায় সুদূর প্রান্তগুলিতে।
কিন্তু জানেন কি আমাদের হাতের নাগালের মধ্যেই রয়েছে এক অপরূপ সুন্দর জায়গা যেটা কোনো ভূস্বর্গের থেকে কম নয়। আর সেই জায়গাটি হল পূর্ব মেদিনীপুরের ক্ষীরাই (Khirai , Medinipur)। অবশ্য ক্ষীরাইকে লোকে ফুলের দেশ নামেও জানেন অনেকেই। ক্ষীরাই রেলওয়ে স্টেশনের থেকে কিছুটা দূরত্বে রয়েছে ফুল চাষের মাঠ।
যেখানে দাঁড়িয়ে যতদূর চোখ যায় শুধুই ফুল আর ফুল। সূর্যমুখী, গাঁদা থেকে শুরু করে গোলাপ আরো কত নাম না জানা ফুল।
কোনো এক পড়ন্ত বিকেলে যদি ক্ষীরাই এর সৌন্দর্য চাক্ষুষ দর্শন করেন তাহলে মুগ্ধ হবেনই হবেন। না বলে পারছি না, ফুলের রাজ্য ক্ষীরাইতে গেলে জীবনানন্দ দাশের লেখা একটি কবিতার লাইন বারবার মনে পড়ে, ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি। তাই পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর’। সত্যিই এখানে গেলে কিছুক্ষনের জন্য হয়তো ক্লান্তি, জীবনের হাজারো সমস্যা ম্যাজিকের মত হাওয়া হয়ে যাবে।
এতো গেল ক্ষীরাই এর বর্ণনা, এবার যদি যেতে ইচ্ছা করে তাহলে! আসুন আপনাদের জানিয়ে দিই কিভাবে পৌঁছাবেন এই স্বপ্নের ফুলের দেশে। আপনি যদি কলকাতাবাসী হন বা হাওড়ার কাছাকাছি থাকেন তাহলে হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে করেই পৌঁছাতে পারেন। এর জন্য আপনাকে হাওড়া স্টেশন থেকে মেদিনীপুরগামী বা খড়্গপুরগামী যেকোনো ট্রেনে উঠে পড়তে পারেন।
পাঁশকুড়া জংশন স্টেশনের পরের স্টেশন হল ক্ষীরাই। ট্রেনে যেতে দেড় ঘন্টা থেকে পৌনে দুই ঘন্টা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। স্টেশনে নেমে হাত পথেই রওনা দিতে পারেন ক্ষীরাই এর উদ্দেশ্যে। এর জন্য তিন নম্বর লাইন এর পাশ দিয়ে হাটতে থাকুন দেখবে ১৫-২০ মিনিটের মধ্যেই যেন অন্য একটা জগতে পৌঁছে যাবেন। যেন চোখের সামনে দেখতে পারবেন ফুলের উপত্যকা (Flower Valley)।
রেল লাইন বরাবরই রয়েছে কাঁসাই যদি। যার দুই পাশে রয়েছে অজস্র ফুলের গাছ। তবে, মনে রাখবেন ফুল যেমন সুন্দর তেমনই কোমল। আর প্রকৃতির এই অপরূপ সৃষ্টি কিন্তু রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই বর্তায়। তাই ঘুরতে অবশ্যই যান তবে খেয়াল রাখবেন ফুলের যেন কোনো ক্ষতি না হয়।