সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে বহু প্রতীক্ষিত কেজিএফ ছবির দ্বিতীয় পর্ব কেজিএফ চ্যাপ্টার ২ (KGF Chapter 2)। ছবিতে সুপারস্টার যশকে (Yash) দেখা যাবে মূল নায়কের চরিত্রে। সাথে খল নায়কের চরিত্রে থাকবে সঞ্জয় দত্ত। সোনার খনির জন্য অসহায় সাধারণ মানুষের ওপর হওয়া অত্যাচার নিয়ে তৈরী ছবির কাহিনী। তবে জানলে অবাক হতে পারেন কোনো কাল্পনিক গল্প নয়, সত্যিই এমনটা হয়েছিল।
আজ বংট্রেন্ডের পাতায় কেজিএফ এর ইতিহাস আপনাদের কাছে তুলে ধরব। একসময় কেজিএফকে মিনি ইংল্যান্ড বলা হাত। এটা আমাদের দেশ ভারতবর্ষেরই একটি শহর। এই শহরে প্রচুর পরিমাণে সোনা ছিল। এতটাই সোনা ছিল যে মাটিতে হাত দিয়ে খুঁড়লেই সোনা বেরিয়ে আসত। সেই কারণে ব্রিটিশরা এই শহরে সোনা লুট করার জন্য দখল নিয়েছিল। আর এই গোটা শহরটাকে একপ্রকার ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে তুলেছিল।
ছবির নাম কেজিএফ আসলে ইতিহাসের এই স্বর্নভান্ডারের ওপরেই করা হয়েছে। কেজিএফ এর পুরো কথা হল কোলার গোল্ড ফিল্ডস (Kolar Gold Fields)। এটি কেরালার দক্ষিণে অবস্থিত একটি শহর। ১৮৭১ সালে এক ব্রিটিশ প্রথম এই শহর সম্পর্কে কিছু কথা প্রকাশ্যে এনেছিলেন। তাঁর কথাতেই এই শহরের প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়।
জানা যায়, ১৭৯৯ সালে টিপু সুলতানকে যুদ্ধে হত্যা করার পর এই কোলার গোল্ড ফিল্ডস ব্রিটিশরা দখলে নিয়ে নেয়। এমনকি আশেপাশের এলাকাও দখল নিয়ে নেন। এরপর সমস্তটা মহীশূরের এক রাজাকে দেওয়া হয়। সেই সময়েই ব্রিটিশরা মাটি থেকে থেকে সোনা পাওয়ার কথা জানতে পারেন। তারপর গরুর গড়িতে করে মাটি বানানো হয় আর দেখা যায় মাটিতে সত্যিই সোনার টুকরো রয়েছে।
এরপরেই ব্রিটিশরা সিদ্ধান্ত নেন হাতে করে মাটি খুঁড়ে যা পাওয়া যাচ্ছে তা নিতান্তই কম। তাই বেশি সোনা তুলতে হলে বড় বড় মেশিনের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই মত ১৯০২ সালেই বিশাল সমস্ত মেশিন আসে আর সেই সময়েই কেজিএফ হয়ে ওঠে ভারতের প্রথম বৈদ্যুতিক শহর। গোটা দেশের ৯৫% সোনাই আসত এই শহর থেকে। আর কেজিএফ এর জন্যই ভারত সোনার ভাঙার ৬ নম্বরে চলে আসে।
এরপর ব্রিটিশ রাজ শেষ হলে কেজিএফ সরকারের অধীনে চলে আসে। ভারত গোল্ডস মাইনাস লিমিটেডকে এই কেজিএফ এর দায়িত্ব দেওয়া হয় ও সোনা উত্তোলনের অধিকার দেওয়া হয়। কিন্তু সেই কোম্পানি খুব একটা ভালোভাবে সেটাকে চালাতে পারেনি। একসময় সোনা উত্তোলনকারী শ্রমিকদের মেইন পর্যন্ত দিতে পারত না কোম্পানি। এরপর সেটা বন্ধ হয়ে যায়। তবে অনেকেরই বিশ্বাস কেজিএফ এ আজ সোনা লুকিয়ে আছে।