টলিউডের নামী অভিনেতাদের (Tollywood actor) মধ্যে একজন হলেন কাঞ্চন মল্লিক (Kanchan Mullick)। তাঁকে নিয়ে এমনিতে যত চর্চা-বিতর্কই হোক না কেন, তাঁর অভিনয় ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও জায়গাই নেই। বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সিনিয়র শিল্পী তিনি। ‘জনতা এক্সপ্রেস’এর কাঞ্চাই এখন বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক। তবে জীবনে এত সফল হলেও অভিনেতা-বিধায়ক কিন্তু নিজের জীবনের পুরনো সংগ্রামের কথা ভুলে যাননি।
বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এখন ‘কাঞ্চন মল্লিক’ নামটাই যথেষ্ট। রাজনীতির দুনিয়াতেও এখন পরিচিত নাম তিনি। ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র এই অভিনেতার কেরিয়ার শুরু সঞ্চালক হিসেবে। এরপর থিয়েটার, ছোটপর্দা, বড়পর্দা- কাজ করেছেন প্রত্যেক মাধ্যমেই। হয়ে উঠেছেন দর্শকদের ঘরের ছেলে।
আজ কাঞ্চনের কাছে নাম, যশ, অর্থ, খ্যাতি কিছুর অভাব নেই। তবে সর্বদা কিন্তু তাঁর জীবন এতটা সুখের ছিল না। সম্প্রতি একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিজের জীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরেছেন এই বিধায়ক-অভিনেতা নিজে। জানিয়েছেন, ছোট থেকেই পরিবারে অভাব দেখেই বড় হয়েছেন তিনি।
কাঞ্চন বলেন, তাঁর পিতা একটি কারখানায় কাজ করতেন। টেনেটুনে চলত তাঁদের সংসার। কিন্তু অভিনেতা যখন ক্লাস থ্রিতে পড়েন, সেই সময় হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় কারখানাটি। এরপর অভিনেতার বাবা সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়ে তিনি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। পরিবারের মাথায় বাজ ভেঙে পড়েছিল তখন। ওই একটা ঘটনার ধাক্কাই নাকি অভিনেতাকে ৫ বছর পরিণত করে দিয়েছিল।
ক্লাস টেন থেকে সংসারের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন কাঞ্চন। পেট চালানোওর জন্য সেলসম্যানের কাজ থেকে শুরু করে পার্লারের ম্যানেজারের চাকরি- অভিনেতা সব কিছুই করেছেন। এমনকি মদের দোকানের বাইরে দাঁড়িয়ে কোলাও বিক্রি করতেন তিনি। সাড়ে পাঁচ জনের সংসারের হাল ধরতে এই কাজ বেছে নেন কাঞ্চন।
টলিপাড়ার এই বিধায়ন-অভিনেতা জানান, একদিন নাকি তাঁকে একজন জিজ্ঞেস করেছিলেন এত ছোট বয়সেই মদের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে কোলা বিক্রি করতে লজ্জা হয় না? জবাবে তিনি বলেছিলেন, সংসার চালাতে মাসে ১২০০ টাকা লাগে। ১০০০ টাকা দিলেও চালিয়ে নেবেন তাঁরা। ওই ব্যক্তি যদি তাঁকে সেই টাকা দেন তাহলে তক্ষুনি ছেড়ে দেবেন সেই কাজ। এত সংগ্রামের পর অভিনয় দুনিয়ায় পা রাখার পরই বদলাতে শুরু করে কাঞ্চনের ভাগ্য। অনেক লড়াই করে, কমেডিয়ান থেকে শুরু করে ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করেছেন তিনি। আর ওই যে বললাম, এখন তো ‘কাঞ্চন মল্লিক’ নামটাই যথেষ্ট।