‘কাঁচা বাদাম’ (Kacha Badam) গানের সৌজন্যে রাতারাতি ইন্টারনেট সেনসেশন হয়ে গিয়েছিলেন বীরুভূমের বাদাম বিক্রেতা ভুবন বাদ্যকর (Bhuban Badyakar)। তাঁর পরিচিতিই হয়ে গিয়েছিল ‘বাদাম কাকু’ (Badam Kaku) নামে। একটা সময় তাঁর লেখা গানে কোমর দুলিয়েছে গোটা টলিউড-বলিউডের তারকারা। কিন্তু এখন সেই ভুবনেরই পথে বসার জোগাড় হয়েছে। পেটের ভাত জোগাড় করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁকে।
ভুবনের লেখা ‘কাঁচা বাদাম’ ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই ভাগ্য বদলে যায়। যশ, খ্যাতি, অর্থ সব কিছু পেয়েছিলেন তিনি। সেই অর্থ দিয়ে খড়ের কাঁচা বাড়ি ছেড়ে পাকা বাড়ি তৈরিতে হাত দিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎই তাঁর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। কপিরাইট ইস্যুতে জড়িয়ে হাতছাড়া হয় ‘কাঁচা বাদাম’ গান। ওদিকে আবার পাড়ার কিছু গুণ্ডার তাণ্ডবে হাতছাড়া হয় দোতলা বাড়িও।
তবুও কোনোভাবে দিন কাটিয়ে দিচ্ছিলেন ‘বাদাম কাকু’। তবে এবার একেবারে পথে বসার জোগাড় হয়েছে। ‘কাঁচা বাদাম’ গায়কের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট একেবারে ফাঁকা হওয়ার মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। ভুবন জানান, ‘গোধূলিবালা মিউজিক’এর কর্ণধার গোপাল ঘোষ তাঁর থেকে ‘কাঁচা বাদাম’ কেনার সময় বলেছিলেন প্রত্যেক মাসে ৪০ হাজার টাকা দেবেন। কোনও বার সামান্য কম হতে পারে। তবে মাত্র একবারই ৩৯ হাজার টাকা দিয়েছেন তিনি। এরপর থেকে একটা টাকাও দেননি তিনি।
গত দু’বছর ধরে এক পয়সাও আসেনি ভুবনের ব্যাক অ্যাকাউন্ট। ওদিকে প্রথমবার দেওয়া ৩৯ হাজার টাকাও শেষের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। কপিরাইট হারানোর পর নিজের ‘কাঁচা বাদাম’ গানটাও গাইতে পারছেন না তিনি। সব মিলিয়ে, চরম দুর্দশায় দিন কাটছে তাঁর।
‘বাদাম কাকু’র আর্জি, ‘আমায় বাঁচান! যে ক’টা টাকা আছে সেটা দিয়ে সংসার চলবে না’। একসময়কার ইন্টারনেট সেনসেশনকে নিয়ে এখন লোকের মধ্যে মাতামাতিও কমে এসেছে। কোনও শোয়েও তেমন ডাক পান না তিনি। এই অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’মুঠো ভাত কীভাবে তুলে দেবেন সেই চিন্তাতেই পড়েছেন ভুবন।
‘কাঁচা বাদাম’ কপিরাইট বিতর্কে আগেই গোপাল ঘোষের নাম নিয়েছিলেন ‘বাদাম কাকু’। তাঁর সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। তবে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ভুবন যে অভিযোগ করেছেন, তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে।