সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে ‘অপরাজিত’ ছবিটি, অনিক দত্ত পরিচালিত এই ছবি বর্তমানে বাংলা ছবির মান অনেকটা উঁচুতে তুলে দিয়েছে। বাঙালির গর্বের সেরা পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের পাঠের পাঁচালী তৈরির কাহিনীকে রুপোলী পর্দায় অসাধারণ ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ছবিতে সত্যজিৎ এর চরিত্রে অভিনয় করে ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছেন অভিনেতা জিতু কমল।
টেলিভিশনের তারকা হলেও টলিউডের বাংলা ছবিতে আজ ব্যাপকভাবে প্রশংসিত জিতু কমল। দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য বিখ্যাত পরিচালক শ্যাম বেনেগাল থেকে সত্যজিৎ রায়ের ছেলে সন্দীপ রায়ের থেকেও প্রশংসা পেয়েছেন। তবে আজ সাফল্য পেলেও শুরুটা কিন্তু একেবারেই অন্য রকম ছিল। কথায় বলে সহজে কোনো কিছুই পাওয়া যায় না। শুরুতে একটা সুযোগের জন্য পরিচালকদের দরজায় দরজায় ঘুরতে হয়েছে।
সম্প্রতি ‘দ্য বং আনটোল্ড’ নামক ইউটিউব চ্যানেলে জীবনের জীবনের অভিনেতা হওয়ার সংগ্রামের কথা শেয়ার করেছেন জিতু কমল। সেখানে তিনি জানিয়েছেন কিভাবে শুরুতে দিনের পর দিন একটা কাজের আশায় ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থেকেছেন পরিচালকের কাছে। সকাল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত না খেয়ে বসে থেকেছেন যদি ডাক পরে যায় এই ভেবে। কিন্তু সন্ধ্যে নামতেই হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। পরের দিন আবারও একই ঘটনা।
এরপর যখন সুযোগ পাওয়ার সময় এল তখন পরিচালক ডেকে জিজ্ঞাসা করেন আগে কি কাজ করেছো? উত্তরে জিতু জানিয়েছিলেন আপনারা যদি কাজই না দেন তাহলে কাজ করব কি করে? আর অভিজ্ঞতাই বা আসবে কথা থেকে? তাছাড়া যদি কাজ নাই দেবার থাকে তাহলে রোজ রোজ ডেকে পাঠিয়ে অপেক্ষা করিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয় কেন?
বোঝাই যাচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখার সময়টা বেশ লড়াই করতে হয়েছে অভিনেতাকে। একটা কাজের আশায় পরিচালকদের থেকে অপমান সহ্য করে যেতে হয়েছে দিনারপুর দিন। এদিন একরাশ অভিমান ধরা পড়েছে জিতু কমলের কণ্ঠে। তিনি জানান, সোদপুরে তাঁর বাড়ি কিন্তু তাকে গাড়ি এসে বরানগরে নামিয়ে দিয়েই চলে যায়। এরপর কোনোমতে বাড়ি ফিরে বাবার থেকে টাকা চেয়ে ট্যাক্সির ভাড়া মেটাতে হয়। সে সময় মা বাবাও বলেছিল এসব বোধয় হবে না। তবে হাল ছাড়তে নারাজ ছিলেন তিনি। নিজের জেদেই আজ ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র পর্দায় অভিনয়ের সুযোগ মিললেই যে যেকেউ অভিনেতা হতে পারে সেটা হয়। তবে কিছু অভিনেতা এমনও থাকে যারা এমন কিছু কাজ করেন যেটা একেবারেই মানুষের মনে গেঁথে যায়। আজ সত্যজিৎ চরিত্রে জিতু কমল তেমনই মানুষের মনে গেঁথে গিয়েছেন। সাধারণ দর্শক থেকে শুরু করে সাহিত্যিক, চলচ্চিত্র সমালোচক সকলের কাছেই প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। অভিনেতার আগামী দিনের জন্য বংট্রেন্ডের পক্ষ থেকে রইল একরাশ শুভেচ্ছা।