বাংলা ছবির রুচিশীল দর্শকদের কাছে সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray) নামটা দেবতার মত। তাঁর তৈরী প্রতিটা ছবিই মুগ্ধ করেছে দর্শকদের বারে বারে। তবে সম্প্রতি অনীক দত্তের ছবি ‘অপরাজিত’ (Aparajito) আবারও বাঙালির গর্ব সত্যজিৎ রায়কে ফিরিয়েছে রুপোলি পর্দায়। ছবিতে সত্যজিতের চরিত্রে অভিনয় করেছেন টালিউডের অভিনেতা জীতু কমল (Jeetu Kamal)। নিজের অসাধারণ অভিনয় দিয়ে রুপোলি পর্দায় আবারো বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগের ছবি তুলে ধরেছেন তিনি।
অবশ্য এর জন্য অভিনেতার পাশাপাশি প্রশংসা করতেই হয় মেকআপ আর্টিস্টেরও। একেবারে অবিকল সত্যজিৎকে দেখে রীতিমত বাকরুদ্ধ হ্যোয়েছেন দর্শকেরা। যদিও শুরুতে ছবি রিলিজ হওয়ার পর কিছুটা আশাহত হয়েছিল বাঙালিরা। কারণ নন্দনে জায়গা পায়নি ‘অপরাজিত’। বাংলায় খুবই নগন্য সংখ্যক স্ক্রিনে দেখা যাচ্ছিলো ছবিটি। তবে বর্তমানে বেড়েছে স্ক্রিনিংয়ের সংখ্যা, সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দর্শকের সংখ্যাও।
শহরের একাধিক সিনেমা হলে হাউসফুল হচ্ছে ‘অপরাজিত’, সোশ্যাল মিডিয়াতে সেই খবর নিজেই শেয়ার করেছেন অভিনেতা জীতু কমল। অবশ্য শুধু কলকাতা বা বাংলায় নয় সুদূর মুম্বাইতেও বলিউড থেকে দক্ষিণী ছবির ভিড়ে নিজের জায়গা করে নিয়েছে ‘অপরাজিত’। কোটি কোটি টাকার বাজেটের ১০০ কোটির বক্স অফিস করা সিনেমাকেও জনপ্রিয়তার দিক থেকে পিছনে ফেলে দিয়েছে এই ছবি।
ছবি রেটিং ওয়েবসাইট IMDb যে কোনো ছবির জনপ্রিয়তা মাপার মাপকাঠি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এখানে কেজিএফ ২ কেও পিছনে ফেলে দিয়েছে অপরাজিত। KGF 2 যেখানে ৮.৯ রেটিং পেয়েছে সেখানে Aparajito এর রেটিং ৯.৩। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে বাংলা ছবি চাইলে বলিউড থেকে দক্ষিণী ছবিকেও অনায়াসেই মাত দিতে পারে।
প্রসঙ্গত, ১৩ই মে ছবির রিলিজ হওয়ার কথা থাকলেও সত্যজিৎ রায়ের ১০১ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মুম্বইয়ে ‘অপরাজিত’ এর বিশেষ স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেখানে পরিচালক শ্যাম বেনেগাল (Shyam Benegal) ও সত্যজিৎ রায়ের ছেলে সন্দীপ রায়ের (Sandip Ray) থেকে ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছিলেন জিতু কমল।
যেখানে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাও বলে সম্প্রতিকালে সরব হয়েছেন একাধিক তারকা থেকে পরিচালক প্রযোজকেরা সেখানে ‘অপরাজিত’ ছবির এই সাফল্য সত্যিই প্রশংসনীয়। তবে আফসোস একটাই যেখানে তথাকথিত ব্যবসায়িক বাংলা ছবি নিয়ে টালিউডে তুমুল মাতামাতি চলে সেখানে ‘অপরাজিত’ ছবিটিকে নিয়ে সেভাবে কোনো হেলদোল নেই টলিউডের।