বাংলার জনপ্রিয় সিরিয়ালের মধ্যে একটি হল ‘কে আপন কে পর’ সিরিয়াল। সিরিয়ালে মূল চরিত্র ‘জবা’। বাড়ির কাজের মেয়ে হিসাবেই অভিনয় শুরু হয়েছিল জবার। কিন্তু নিজের পরিবারের জন্য লড়াই করতে শুরু করে সে। কাজের মেয়ে হয়েও ওকালতি পড়তে শুরু করে। এরপর ওকালতি পাশ করে উকিল হয় ওঠে জবা। যে বাড়িতে কাজ করত, সেই বাড়িতেই ছোট বউ হয় জবা। এই জবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী পল্লবী শর্মা (Pallabi Sharma)।
সিরিয়ালের পর্দায় জীবনের সংগ্রামের যে কাহিনী আমরা দেখি, বাস্তবে কিন্তু তাঁর থেকে খুব একটা আলাদা নয় অভিনেত্রীর জীবন। সেই কারণেই হয়তো এতটা বাস্তবিকভাবে জবার চরিত্রে অভিনয় করে চলেছেন অভিনেত্রী। পল্লবী একাধিকবার সাক্ষাৎকারে তাঁর জীবনের সংগ্রামের কথা জানিয়েছেন। সম্প্রতি জি বাংলার দিদি নং ১ এ হাজির হয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেখানে রচনা ব্যানার্জী ও দর্শকদের নিজের জীবনের সংগ্রামের কথা জানান।
হাওড়ার বাসিন্দা পল্লবী বলেন, খুব ছোট বয়সেই মাকে হারান তিনি। পল্লবী যখন ক্লাস টুতে পড়েন তখনই ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হন তাঁর মা। মাকে বাঁচানোর জন্য পল্লবীর বাবা ও দাদা তাঁর মাকে চেন্নাই নিয়ে যান। সেই সময় পিসির কাছেই থাকতে হন পল্লবীকে। পিসি অবশ্য মায়ের মতোই ভালোবেসেছিলো পল্লবীকে। মায়ের অভাব বুঝতে দেয়নি কোনোদিন। কিন্তু চেন্নাইতে গিয়ে চিকিৎসা করিয়েও বাঁচানো যায়নি পল্লবীর মাকে। ক্লাস টুতে পড়াকালীনই মা হারা হন পল্লবী।
এরপর পিসির কাছেই মানুষ হতে থাকেন পল্লবী। নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যান পিসির বাড়ি থেকেই। কিন্তু দশম শ্রেণীর পরীক্ষার প্রথম দিনেই মারা যান অভিনেত্রীর বাবা। শুনলে হয়তো অবাক হবেন, পরীক্ষা থেকে ফিরে এসে বাবার সৎকার করতে যেতে হয়েছিল পল্লবীকে। এই পরিস্থিতিতে যেখানে সকলেই ভেঙে পড়েন পল্লবী পরীক্ষা দিয়েছিলেন ও সফল হয়েছিলেন। এরপর ভবানীপুরে কলেজে ভর্তি হন পল্লবী।
পল্লবীর কলেজে পড়ার সময় থেকেই অভিনয়ের প্রতি একটা টান শুরু হয়। কারণ অভিনেত্রীর পিসি অভিনয়ের সাথে যুক্ত ছিলেন। পিসির সাথে মাঝে মধ্যেই ষ্টুডিওতেও এসেছিলেন পল্লবী। এরপর ধীরে ধীরে অভিনয়ের প্রতি টান বাড়ে ও কিছু পরিচালকদের সাথে আলাপ হয়। এরপর একসময় অডিশন দেন পল্লবী। আর অডিশন দিবার পরেই জুটে যায় ‘কে আপন কে পর’ সিরিয়ালে জবার রোল। সেই থেকেই অভিনয় জগতে আসা পল্লবীর। তবে বর্তমানে সিরিয়ালে অভিনয়ের কারণে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন পল্লবী শর্মা।