যে কোনও ছবির শ্যুটিংয়ের ক্ষেত্রেই নির্মাতারা আগে কাহিনীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখা স্থান নির্বাচন করেন। এরপর বেশ কয়েকটি অপশনের মধ্যে থেকে একটিকে বেছে নিয়ে সেখানেই হয় শ্যুটিং(Shooting)। এই শ্যুটিং কখনও সত্যিকারের লোকেশনে করা হয়, আবার কখনও সেটের মধ্যেই করা হয়। সেটের ক্ষেত্রে এমন ভাবেই তা তৈরি করা হয়, যা দর্শকদের কাছে বেমানান না লাগে। কিছু কিছু সিনেমার দৃশ্য তো এখনও সেই কারণেই দর্শকমনে রয়ে গিয়েছে।
তবে শুধুমাত্র যে ঘর, সেট বা আউটডোরের বিভিন্ন লোকেশনে শ্যুট করা হয় এমনটা কিন্তু নয়। বলিউডে (Bollywood) এমন বহু সিনেমা রয়েছে যার দৃশ্যায়ন ট্রেনের কামরার ভেতর অথবা রেল স্টেশনে করা হয়েছে। তা সে ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’ ছবির শেষ দৃশ্য হোক বা ‘চেন্নাই এক্সপ্রেস’ ছবির শুরুর অনেকটা অংশ। বলিউডের বহু সুপারহিট ছবির শ্যুটিং রেল স্টেশন বা ট্রেনের কামরার মধ্যে হয়েছে।
১৯৬৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘নায়ক’ ছবির বেশিরভাগ দৃশ্যে যেমন দেখা গিয়েছিল, উত্তম কুমার এবং শর্মিলা ঠাকুর একটি ট্রেনের কামরার মধ্যে বসে কথোপকথন করছেন। এছাড়া ‘দিল সে’ ছবিতে ট্রেনের ছাদের ওপর শাহরুখ খান-মালাইকা অরোরার নাচের দৃশ্য তো এখনও দর্শকদের মনে রয়েছে।
তবে শুধু এই দুই ছবিই নয়, বলিউডের ইতিহাসের বহু ব্লকবাস্টার ছবির দৃশ্যায়ন রেল স্টেশন কিংবা ট্রেনের কামরায় হয়েছে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে, ‘শোলে’, ‘গদরঃ এক প্রেম কথা’, ‘বীর জারা’, ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’, ‘এম এস ধোনিঃ দ্য আনটোল্ড স্টোরি’র মতো ছবির নাম।
তবে আপনি কি জানেন, বলিউডের বিভিন্ন ছবির শ্যুটিং করতে দিয়ে প্রত্যেক বছর ভারতীয় রেল (Indian Rail) মোটা অঙ্কের টাকা উপার্জন করেন? হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। বিনা পয়সায় রেল স্টেশনে বা ট্রেনের কামরায় শ্যুট করতে দেওয়া হয় না। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে যেমন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে ২.৫ কোটি টাকা আয় করেছে ভারতীয় রেল। এর মধ্যে কিরণ রাও একাই তাঁর আগামী ছবি ‘টু ব্রাইডস’এর জন্য রেলকে ১ কোটি ২৭ লাখ টাকা দিয়েছেন। টানা ২৪ দিন ধরে মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেশনে ছবির শ্যুটিং হয়েছে।
সিনেমা বা ওয়েব সিরিজের শ্যুটিং করতে হলে আগে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি নিতে হয়। ভারতীয় রেল বোর্ডের সঙ্গে ফিল্ম ফ্যাসিলিটেশন অফিসের সহযোগিতায় একটি পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে। সেখানে আবেদন করতে হয়। তবে তথ্যচিত্র, মিউজিক ভিডিও কিংবা বিজ্ঞাপনের শ্যুটিং করতে হলে প্রযোজকদের অফলাইন প্রক্রিয়ায় আবেদন করতে হয়। সিপিআরও দফতরে লিখিত আবেদন জানাতে হয়। এরপর নথিপত্র যাচাই করে সেখান থেকেই শ্যুটিংয়ের অনুমতি দেওয়া হয়।