সদ্য শেষ হয়েছে সাত মাস ব্যাপী চলতে থাকা ইন্ডিয়ান আইডলের ১৩ (Indian Idol Season 13)-তম মরশুমের এই সুরেলা সফর। প্রত্যাশিত ভাবেই দর্শকদের মনের ইচ্ছা পূরণ করে এবছর ইন্ডিয়ান আইডলের বিজয়ী (Winner) হিসেবে সোনালী ট্রফি উঠেছে অযোধ্যার ছেলে ঋষি সিংয়ের (Rishi Singh) হাতে। কোনোরকম প্রশিক্ষণ ছাড়াই কলকাতার মেয়ে দেবস্মিতা রায় এবং জম্মুর চিরাগ কোতওয়ালকে হারিয়ে সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছেন অযোধ্যা নিবাসী এই ১৯ বছরের যুবক।
কোনোরকম প্রথাগত সংগীত শিক্ষা ছাড়াই সঙ্গীতশিল্পী হওয়ার একরাশ স্বপ্ন নিয়ে ঋষি হাজির হয়েছিলেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এই সঙ্গীত প্রতিযোগিতায়। শুরু থেকেই তাঁর সুরেলা গানের গলা মন ছুঁয়েছিল দেশবাসীর। এছাড়াও এই নবীন শিল্পী প্রশংসা কুড়িয়েছেন বিচারকের আসনে উপস্থিত বিশাল দাদলানী,হিমেশ রেশম্মিয়া এবং নেহা কক্করের মতো তাবড় বলিউড সংগীত শিল্পীদের।
এই ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চ থেকেই ঋষি পেয়েছেন বিপুল নাম-যশ-খ্যাতি। বিজয়ী হিসাবে তাঁর ঝুলিতে উঠেছে ২৫ লক্ষ টাকার পুরস্কার এবং সেইসাথে একটা বিলাসবহুল গাড়ি। এছাড়া এই শোতে এসেই জীবনের সবচেয়ে কঠিন সত্যের মুখোমুখি হয়েছেন ঋষি।
এই গানের প্রতিযোগিতার মঞ্চেই ঋষি প্রথম জানতে পারেন দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে যাঁদের নিজের বাবা-মা বলে জানতেন, তাঁরা তাঁর নিজের বাবা-মা নন। মা অঞ্জলি সিং যে তাঁকে নিজের গর্ভে ধারণ করেননি আর বাবা রাজেন্দ্র সিং যে তাঁর নিজের বাবা নন একথা জানার পর কিছুক্ষণের হতচকিত হয়ে গিয়েছিলেন ঋষি।
তবে এটাই জীবনের ধ্রুবসত্য বলে মেনে নিয়ে ট্রফি জেতার পর এপ্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ঋষি বলেছেন ‘নিঃসন্দেহে আমার কাছে এটা বিরাট বড় একটা ধাক্কা ছিল, আমি ভীষণরকমভাবে হতচকিত হয়ে পড়েছিলাম। তবে জরুরি হল আমি সত্যিটাকে গ্রহণ করে নিয়েছি। সেটা মেনে না নিলে আমার বাবা-মা’র সঙ্গে বাকি জীবনটা সুন্দরভাবে কাটাতে পারব না’।
অন্যদিকে রিয়ালিটি শাওয়ার মঞ্চে এমন একটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় ইতিমধ্যেই দাবি উঠতে শুরু করেছে গানের মঞ্চে দর্শকদের থেকে সমবেদনা পেতেই কায়দা করে ঋষির এই ‘অ্যাডপশন’-এর কাহিনি সামনে আনা হয়েছে। অনেকে আবার দাবি করছেন ঋষি সবটাই আগে থেকে জানতেন। কিন্তু ইন্ডিয়ান আইডলের মঞ্চে এসে সে প্রথমবার জানবার নাটক করেছে। এপ্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ঋষি বলেছেন, ‘আমি শুধু নিজের পারফরম্যান্সের উপর নজর দিয়েছি, পরিশ্রম করেছি। এইসব নিয়ে কোনওদিন ভাবিনি, আর ভাবতে চাইও না’।