ইতিপূর্বে সামাজিক মাধ্যমে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুরহস্যের কাটাছেঁড়ার বিষয়ে ইমরান হাশমি বলেছিলেন, “সার্কাস চলছে।” পুনরায় স্বজনপোষণ বিতর্কে মুখ খুললেন অভিনেতা। বলিপাড়ার এই বিতর্কমূলক আবহ যে ক্ষণস্থায়ী এবং এই পরিস্থিতিতে সবকিছু নিয়েই ভুল বোঝাবুঝি চলছে, তাও জানান বলিউডের ‘সিরিয়াল কিসার’।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের একটি অংশের বিরুদ্ধে বলিউডকে অপমান করার অভিযোগ এনেছেন প্রযোজক ও পরিচালকদের একটি গোষ্ঠী। সেই বিতর্ক সম্পর্কে বলতে গিয়ে অভিনেতার বক্তব্য, “সকলে নয়, তবে ব্রেকিং নিউজের পিছনে ছোটা সংবাদমাধ্যমগুলিই এর জন্য দায়ী। সুশান্ত কেসের রহস্য ফাঁসের দায়িত্ব সিবিআইয়ের, মিডিয়ার নয়। মিডিয়ার উচিত দেশের অর্থনীতি বা করোনা পরিস্থিতির মত গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলি তুলে ধরা।” অভিনেতা এ বিষয়েও আশাবাদী যে মানুষ খুব শীঘ্রই একে-অপরকে দোষারোপের পথ থেকে সরে আসবেন।
স্বজনপোষণ বিতর্কে সংবাদমাধ্যমকে একহাত নিয়েছেন ইমরান। তিনি সবসময়ই তাঁর বলিউডে পা রাখার পিছনে কাকা মহেশ ভাটকে কৃতিত্ব দিয়ে থাকেন। অভিনেতার বক্তব্য, “আমি সবসময়ই চাই যাতে বলিউডে সকলে সমান সুযোগ পায়। কিন্তু আমাকে যদি প্রশ্ন করা হয় যে বলিউডে আমার অবসরের পর আমার স্থানে আমি কাকে দেখতে চাই। আমি অবশ্যই আমার ছেলের নাম বলব, কারণ আমার ছেলের বদলে অন্য কাউকে আমি কেন অগ্রাধিকার দেব?”
এর পরেই যথারীতি ইমরানের ভক্তমহলে প্রশ্ন ওঠে যে, তাহলে কি এরপরে ইমরানের ছেলেকে দেখে যাবে বলিউডে? উত্তরে অভিনেতা জানিয়েছেন, “আমি কারোর ওপরেই আমার ইচ্ছা চাপিয়ে দিই না। বরং যদি আয়ান বলিউডে অভিনয় করতে চায়, তবে আমার সহযোগিতা সবসময় ওর সাথে থাকবে। আমি ওকে সর্বদা বলি, নিন্দুকদের কথায় কান দিও না, তোমার অভিনয়ক্ষমতাই তোমাকে অন্তিম লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে।” যদিও হাশমি এও জানিয়েছেন যে খ্যাতি অর্জনের ক্ষেত্রে বলিপাড়ায় সকলকেই যে কঠিন পরিশ্রম করতে হয়, এমনটা একেবারেই নয়!
হাশমি সংবাদমাধ্যমের সামনে জানিয়েছেন যে, স্বজনপোষণের যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ঠিক নয়। তিনি জানিয়েছেন, “তারকার সন্তান হওয়ার ফলে বলিউডে কিছু অতিরিক্ত সুযোগ পাওয়া সম্ভব হলেও ঠিক একই কারণে প্রত্যাশার বিশাল চাপ তাদের উপরেও থাকে। বলিউডে নতুন পা দেওয়া কোনো অভিনেতা বা অভিনেত্রীর উপর এই চাপ থাকে না। ফলে স্টারকিড হওয়ার সুবিধা বা অসুবিধা দুটোই রয়েছে। এমন উদাহরণ বলিউডে ঝুড়িঝুড়ি, যেখানে একেবারে আনকোরা অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও সফল হয়েছেন চরমভাবে!” অন্যদিকে বলিউডে নিজের আগমনের বিষয়ে মহেশ ভাটের ‘সুযোগ পাইয়ে দেওয়া’-র বিষয়টি কিন্তু একেবারেই অস্বীকার করেন না ইমরান।
নিজের অভিজ্ঞতার বিষয়ে বলতে গিয়ে ইমরান বলেছেন, “বলিউডে প্রথম কাজ করি পার্শ্বচরিত্রে। তখনই বুঝে যাই, প্রতিভা আর কঠিন পরিশ্রমের মিশ্রণেই সম্ভব পার্শ্বচরিত্র থেকে নায়কের চরিত্রে উত্তরণ। নিজের পরিশ্রমে আমি আজ এই জায়গায়, আর তাই স্বজনপোষণ বিতর্কে আমি কোন স্থানে, তা বিচারের ভার দর্শকদের উপরেই ছেড়ে দিলাম!”
সামনে অনেকগুলি কাজ হাশমির হাতে। মুম্বই সাগা, চেহরে, সব ফার্স্ট ক্লাস হ্যায় এবং এজরা-র মত ছবি করতে চলেছেন তিনি। অভিনেতার কথায়, “কারোর হাত মাথায় থাকুক বা না থাকুক, কমার্শিয়াল সাফল্য সবসময়ই বলিউডে উত্তরণের চাবিকাঠি। আর আমার কেরিয়ারে ‘মার্ডার’ সেই চাবিকাঠির ভূমিকায় ছিল!”