একদিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের তান্ডবে গোটা দেশের হালই বেহাল। মৃত্যুমিছিলে রোজই বাড়ছে হাজার হাজার মানুষের সংখ্যা, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তদের সংখ্যা। একদিকে রাজ্যজুড়ে লকডাউনের জেরে অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য সব পরিকাঠামোই প্রায় ধ্বসের মুখে। এরমধ্যেই তান্ডব চালিয়ে গেল ভয়ঙ্কর ঘূর্নিঝড় ইয়াস। এবারের ঝড় শহর কলকাতার বুকে তেমন প্রভাব না ফেললেও, উপকূলবর্তী এলাকার মানুষদের প্রায় সর্বস্বই ভেসে গিয়েছে।
সেদিনের পর থেকেই বারংবার ইমন ছুটে গিয়েছেন ইয়াস বিধ্বস্ত এলাকার অসহায় মানুষদের কাছে। কখনো তমলুক, কখনো সন্দেশখালি কখনো বা হিঙ্গলগঞ্জ। এবার তারা ত্রাণ নিয়ে রওনা হয়েছিলেন গোসাবার পথে। যাত্রাপথেই একটি লাইভ থেকে ইমন জানান তারা দীর্ঘ ৪ ঘন্টা লঞ্চে আটকে রয়েছেন ভাটার কারণে, জোয়ার না আসা অবধি লঞ্চ চলবেনা। তবুও হাল ছাড়েননি গায়িকা। তিনি মরিয়া ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য।
মাঝ নদীতে আটকে পড়ে লঞ্চে বসেই লাইভে আসেন ইমন, ধন্যবাদ জানান যারা তাদের এই উদ্যোগে সাহায্য করেছেন তাদের উদ্দেশ্যে। চাল, ডাল এবং শুকনো খাবার নিয়ে তাঁরা যাচ্ছিলেন গোসাবা এলাকার কমিউনিটি কিচেনের দিকে ৷ সেখানে তাঁরা পৌঁছে দেবেন প্রয়োজনীয় শুকনো রসদ ৷ লাইভে তার সহযোগীদের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি, তিনি দেখান ইয়াস বিধ্বস্ত এলাকায় নদীর দুপাশের অবস্থাও।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই রক্তদান ও করেছিলেন অভিনেত্রী, “রক্তদান করছি। সমাজের কাজ করছি। খুশির রবিবার।” এছাড়াও, এই পরিস্থিতিতে অসহায়দের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন গায়িকা। তমলূকে রূপনারায়ণের পাড়ে দাঁড়িয়েই সেখানকার কঠিন অবস্থা লাইভে তুলে ধরেছিলেন ইমন। মানুষ গৃহহীন, জলের তলায় তলিয়ে গিয়েছে বাড়ি। ইমনের টিম ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে গেলেও, এই পরিস্থিতিতে সেগুলো খুবই নগন্য বলেই মত গায়িকার। তিনি জানান আরও সাহায্য প্রয়োজন।
তাই সোশ্যাল মিডিয়াবাসীর কাছে আর্তদের জন্য সাহায্য চেয়েছিলেন গায়িকা। যারা এই সময় বাড়ি থেকে বেরিয়ে কাজ করতে পারছেন না তাঁদের অন্তত অর্থসাহায্য করে পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে শেয়ার করেছেন এক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ডিটেলসও।
কিন্তু কিছুজনকে পাশে পেলেও স্বভাবতই অসংখ্য সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে গায়িকাকে। কেউ বলছেন ‘প্রচার’ তো কেউ বলছেন ‘ভোটে দাঁড়ানোর ছক’। এই সব ট্রোলের জবাবে ইমন সাফ লেখেন, ‘আমি একজন সঙ্গীতশিল্পী। গত ১ বছর ধরে হাতে গুনে ১০টা শো করেছি। আমার মতো সব শিল্পীর প্রায় একই অবস্থা। তা ঠিক আছে। চলে যাচ্ছে। তা, এই যো বিভিন্ন জায়াগায় গিয়ে ‘ত্রাণ’ দেওয়ার ছবি ভিডিয়ো দেখে যাদের মনে হচ্ছে যে নিজের প্রচার করছি বা ভোটে দাঁড়ানোর কাজকর্ম শুরু করছি…বা যারা প্রত্যেক মুহূর্তে অশালীন কথা বলে চলেছেন তাদের একটা কথা বলি.. আপনাদের প্রত্যেকটা খারাপ কথা কিন্তু আমাকে এগিয়ে নিয়েই যাচ্ছে। আমি কিন্তু পিছিয়ে যাচ্ছি না। আর যাবও না। অনেক ধন্যবাদ যারা যারা আমার অ্যাডভার্টাইজ়মেন্ট দেখে ডোনেট করছেন…আপনাদের জন্য প্রায় তিন হাজার মানুষ খেতে পেয়েছেন, এক বেলা হলেও। ভাল রাখাটা একটা আর্ট। ওটা সবাই পারে না। আমি মন থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাদের যাঁরা আমার পাশে আছেন। ধন্যবাদ। ইমন।’