টানা ১৯ দিনের এক লড়াইয়ে ইতি পড়ল। চিকিৎসকদের অনেক চেষ্টা, অনেক প্রার্থনা সত্ত্বেও এবার আর সুস্থ হয়ে ফিরলেন না টলিউডের নামী অভিনেত্রী (Tollywood actress) ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma)। মাত্র ২৪ বছর বয়সেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে প্রত্যেক মুহূর্তে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে গেলেও শেষ পর্যন্ত রবিবার বেলা ১২:৫৯ নাগাদ এই যুদ্ধে হার মানলেন ঐন্দ্রিলা।
ঐন্দ্রিলার জীবন-মৃত্যুর এই লড়াইয়ে পরিবার ছাড়া শুরু থেকে যিনি পাশে ছিলেন তিনি হলেন অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury)। সারাক্ষণ অভিনেত্রী এবং তাঁর পরিবারের পাশে ঢালের মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু এবার তাঁর হাত ছেড়ে দিলেন ঐন্দ্রিলা। অভিনেত্রীর প্রয়াণের সংবাদ পাওয়ার পর থেকেই সকলের মনে একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে এখন কেমন আছেন সব্যসাচী?
একটি নামী সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকে সব্যসাচীর খোঁজ নিতে যোগাযোগ করা হয়েছিল অভিনেতা সৌরভ দাসের (Saurav Das) সঙ্গে। ঐন্দ্রিলা-সব্যসাচীর এই লড়াইয়ে পাশে ছিলেন তিনিও। প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে বহু রাত হাসপাতালেও কাটিয়েছেন পর্দার ‘মন্টু পাইলট’। এবার সেই সৌরভই জানালেন, ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর পর এক বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সব্যসাচী।
সৌরভ জানান, ‘সব্য খুবই ভেঙে পড়েছে। এই অবস্থায় আর কেমনই বা থাকবে ও! ঐন্দ্রিলার পরিবারও প্রচণ্ড ভেঙে পড়েছে। কিন্তু সব্যকে বলেছি একটুও চোখের জল না ফেলতে। আজ ওঁকেই ঐন্দ্রিলার পরিবারকে সামলাতে হবে। ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে সব্যসাচী আর কোনোদিন কিছু লিখবে না। কারণ মিষ্টির কথাতেই ও লিখতে শুরু করেছিল। সকলের সঙ্গে ঐন্দ্রিলার স্বাস্থ্যের আপডেট ভাগ করে নিচ্ছিল। তাই কেউ যদি ভাবে সব্য কোনও কিছু পোস্ট করবে। তাহলে সেটা হবে না’। প্রসঙ্গত, সব্যসাচীর সামাজিক মাধ্যমের প্রোফাইলও আর দেখা যাচ্ছে না। অভিনেত্রীর প্রয়াণের পর তিনি সামাজিক মাধ্যম থেকে বিদায় নিলেন কিনা ঘুরপাক খাচ্ছে সেই প্রশ্ন।
এরপরই ফেসবুকেও একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন সৌরভ। অভিনেতা সেখানে লিখেছেন, এখন অনেক ভালো জায়গায় এবং ভালো মানুষদের সঙ্গে রয়েছেন ঐন্দ্রিলা। পাশাপাশি প্রিয় ‘মিষ্টি’কে এও কথা দিয়েছেন যে ‘ভাই’ সব্যর খেয়াল রাখবেন তিনি। অভিনেতা নিজের পোস্টের শেষে আবেদন করেছেন, ‘দয়া করে এখন সব্যসাচীকে ফোন করবেন না। প্রত্যেক সংবাদমাধ্যমের কাছে এটা আমার আন্তরিক অনুরোধ। যে কোনও প্রশ্নের জন্য আমায় ফোন কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ করতে পারেন’।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে ঐন্দ্রিলার প্রথম ধারাবাহিক ‘ঝুমুর’এর সেটে সব্যসাচীর সঙ্গে প্রথম আলাপ তাঁর। প্রথম দেখাতেই শুরু হয়নি প্রেম। আসলে শ্যুটিং থেকে একটু বিরতি পেলেই বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে আড্ডা দিতেন অভিনেত্রী। সেখানে সব্যসাচীও থাকতেন। সেখান থেকেই আস্তে আস্তে ফোনে কথা শুরু হয় তাঁদের। এগোতে থাকে সম্পর্ক। টানা ৫ বছর একসঙ্গে বহু লড়াইয়ের পর অবশেষে আজ সব্যসাচীর হাত ছাড়লেন ঐন্দ্রিলা। অপূর্ণই থেকে গেল তাঁদের রূপকথার গল্প।