এতদিন পর্যন্ত আমাদের ধারণা ছিল মডেল হতে গেলে, র্যাম্পে হাঁটতে গেলে খোলামেলা পোশাক পরায় স্বচ্ছন্দ হতে হয়। যেন যে যত শরীর দেখাতে পারবে, ততই সে সাহসী। এবার এই ধারণাকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণ করে সাহসিকতার নতুন পাঠ দিচ্ছেন হালিমা আদেন।
হিজাব পরে শরীরের আপাদমস্তক ঢেকে র্যাম্পে হাঁটেন। হিজাব পরে র্যাম্পে হাঁটা বিশ্বের প্রথম সুপার মডেল তিনি। তিনিই প্রথম যে মডেলিং এর জন্য পোশাক খুলতে রাজী হননি, আর পোশাল খুলতে পারবেন না বলে মডেলিং পেশাটা ছেড়েও বেরিয়ে যাননি। কেবলমাত্র মুখ আর হাতের তালু অনাবৃত রেখেই সসম্মানে আত্মবিশ্বাসের সাথে র্যাম্পে হাঁটেন হালিমা।
মডেলিং এর জন্য নিজেকে নয় বরং কাজের ধরণ বদলে ফেলায় বিশ্বাসী হালিমা, আর সেখান থেকেই কেরিয়ারে অসংখ্য বাধার সম্মুখীন হয়েও আজ সে সুপার মডেল। ২০১৬ সালে প্রথম বার বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এই শ্যামলা মেয়েটি। মাথায় হিজাব এবং গায়ে বুরকিনি চাপিয়ে ‘মিস মিনেসোটা ইউএসএ’ প্রতিযোগিতায় যখন র্যাম্পে হাঁটছেন হালিমা, তাঁকে দেখে চমকে গিয়েছিলেন বিচারকরা।
খোলামেলা সর্বাঙ্গ উন্মুক্ত করার দৌড়ে যখন সকলে ছুটছে, হালিমা তখন আসছেন সর্বাঙ্গ ঢেকে। এতদিনের প্রচলিত ফ্যাশান সম্পর্কে ধারণার উপর যেন কার্যত হাতুড়ি চালালেন হালিমা। এর পর ওই মডেলিং সংস্থায় তার সাথে তিন বছরের চুক্তি করে।
কেনিয়ার শরণার্থী শিবিরে জন্ম হালিমার। মা-বাবা দু’জনেই সোমালিয়ার নাগরিক। ছ’বছর বয়সে মা-বাবার সঙ্গে আমেরিকায় চলে এসেছিলেন হালিমা। একটু একটু করে মানুষের মানসিকতা বদলাতে শুরু করেন হালিমা। এরপর কখনও নিউ ইয়র্ক ফ্যাশন উইক, কখনও মিলান ফ্যাশন উইক, কখনও কোনও আন্তর্জাতিক স্তরের ম্যাগজিনের জন্য ফটোশ্যুট কিংবা বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী সংস্থার হয়ে মডেলিং- এই ইন্ডাস্ট্রিতে ক্রমশ তাঁর নাম হচ্ছিল।
তবে আজও সকলে এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে মডেলিংকে দেখতে প্রস্তুত নয়, তাই এখনো অসংখ্য কটাক্ষের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। মডেলিং সম্পর্কে তার মত , ‘মডেলিং মানে নতুন কিছুকে গ্রহণ করা, কোনও কিছুর সঙ্গে আপস করা নয়। যিনি যে ভাবে স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন, তিনি সে ভাবেই নিজেকে উপস্থাপন করবেন।’