বলিউডের (Bollywood) অন্যতম সেরা অভিনেতাদের তালিকায় যাঁর নাম বেশ উপরের দিকেই থাকবে, তিনি হলেন গোবিন্দা আহুজা। চিনতে পারলেন না? তিনিই সকলের প্রিয় ‘গোবিন্দা’ (Govinda)। দক্ষ অভিনয়ের পাশাপাশি তাঁর কৌতুকরস এবং অভিনব নাচের কায়দার জন্য ভক্তমহলে এখনও নামডাক রয়েছে গোবিন্দার। যদিও শুধু ভক্তরাই নন, গোবিন্দার হাস্যরসপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ও বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহারের জন্য তাঁর সহ-অভিনেত্রীরাও নাকি সহজেই গোবিন্দার প্রেমে পড়ে যেতেন!
১৯৮৫ সালে ‘তন বদন’ (Tan Badan) সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক হয় গোবিন্দার। রুপোলি পর্দায় জনপ্রিয় হওয়ার পরই বিয়ে করে নেন অভিনেতা। ১৯৮৭ সালের ১১ই মার্চ সুনীতা আহুজাকে (Sunita Ahuja) বিয়ে করেন গোবিন্দা। যদিও গোবিন্দার জীবনে সুনীতাই প্রথম নারী নন। সময়ে সময়ে ইন্ডাস্ট্রির অন্যান্য অভিনেত্রীর সঙ্গেও তাঁর নাম জড়িয়েছে বারংবার। ১৯৮৬ সালে ‘ইলজাম’ (Ilzam) ছবিরর সহ অভিনেত্রী নীলম কোঠারির (Nilam Kothari) সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে বলিমহলে বিস্তর জলঘোলা হয়। যদিও পরবর্তীতে তা ধামাচাপা পড়ে যায়।
নানা অভিনেত্রীর সঙ্গে নাম জড়ালেও গোবিন্দার জীবনে সুনীতার পরেই যিনি উল্লেখযোগ্য, তাঁর নাম জানেন কী? এই সহ-অভিনেত্রীর জন্যে একসময়ে গোবিন্দার বৈবাহিক জীবনও নাকি প্রশ্নের মুখে চলে আসে বলে খবর বলিসূত্রের!
নব্বইয়ের দশকে বলিউডের একটি অন্যতম খ্যাতনামা ছবি হল ‘হদ কর দি আপনে’ (Haad Kar Di Apne)। সেই ছবিতে গোবিন্দার সহ অভিনেত্রী ছিলেন রানি মুখোপাধ্যায় (Rani Mukhopdhyay)। সেইসময়ে রানি আর গোবিন্দার জুটি ছিল সুপার-ডুপার হিট!
তখন সবেমাত্র ইন্ডাস্ট্রিতে পা দিয়েছেন রানি। শুটিং সেটে গোবিন্দার সঙ্গে আলাপ হয় বাঙালি অভিনেত্রীর। আর স্বাভাবিকভাবেই গোবিন্দার ব্যক্তিত্বে আকৃষ্ট হন রানি। অল্পদিনের মধ্যেই দু’জন ভাল বন্ধু হয়ে ওঠেন। সেটে আরও বেশি সময় একসাথে কাটাতে থাকেন রানি-গোবিন্দা। এমনকি শুটিং শেষের পরেও একে অপরকে সময় দিতে শুরু করেন দু’জন। স্বভাবতই তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে শুরু হয় তুমুল গসিপ।
অন্যদিকে ব্যক্তিগত দাম্পত্য জীবনে সুনীতাকে নিয়ে বেজায় খুশি ছিলেন গোবিন্দা। ফলে রানি-গোবিন্দার সম্পর্ককে নিছক বন্ধুত্বই ভাবতে শুরু করে অধিকাংশ। যদিও ভক্তকুলের ভুল ভাঙে গোবিন্দার একটি ‘ভুল’ পদক্ষেপে। ঘটনাচক্রে এক সাংবাদিক রানি মুখোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকার নেওয়ার উদ্দেশ্যে হঠাৎই সাতসকালে হাজির হন রানির বাড়িতে!
সাংবাদিকের মতে, সেইসময় গোবিন্দাও নাকি ছিলেন রানির বাড়িতে। নাইট সুট পরিহিত অবস্থায় সাংবাদিকের সামনে আসেন গোবিন্দা। এর পরই অঙ্গার পড়ে রানি-গোবিন্দার সম্পর্কের গুজবে। শুরু হয় চর্চা। এইসময় বিতর্কের জেরে সরাসরি রানির নেননি গোবিন্দা। তবে সাফ জানান, “আমি ভাগ্যে বিশ্বাস করি। আমার কুণ্ডলিতে দ্বিতীয় বিবাহ যোগ রয়েছে। এই কারণে সুনীতাকে আগেভাগেই প্রস্তুত থাকতে বলেছিলাম।”
গোবিন্দার ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে জানা যায়, রানির প্রেমে পাগল গোবিন্দা নাকি গাড়ি, ফ্ল্যাট এবং হিরের গয়নার মতো দামি উপহার রানির হাতে তুলে দিয়েছিলেন। অন্যদিকে স্ত্রী সুনীতা প্রথমে এই সম্পর্ক নিয়ে কিছু না বললেও সংবাদমাধ্যমের বাড়াবাড়িতে তিনি মুখ খুলতে বাধ্য হন। শোনা যায়, এক বার নাকি গোবিন্দাকে সরাসরি হুমকি দিয়ে বসেন সুনীতা! তাঁর এবং রানির মধ্যে যে কোনও এক জনকে বেছে নেওয়ার সুযোগ দেন গোবিন্দাকে। তারপরই সন্তানদের নিয়ে গোবিন্দার বাড়ি ছেড়ে চলে যান সুনীতা। এ দিকে রানিও নাকি বিয়ের জন্য বারংবার বলতে শুরু কটন গোবিন্দাকে।
এমনিতে সংসারী গোবিন্দার জীবনে স্ত্রী সুনীতা এবং তাঁদের সন্তানদের গুরুত্ব যে অনেকটাই বেশি, সেটা ক্রমশ রানি বুঝে যান। সময়ের নিয়মে তাঁদের সম্পর্কে ছেদ পড়ে। বেশ কিছু বছর পর ২০১৪ সালে চিত্র প্রযোজক আদিত্য চোপড়াকে (Aditya Chopra) বিয়ে করেন রানি মুখোপাধ্যায়।