বাংলা সিরিয়ালের (Bengali Serial) অত্যন্ত অভিজ্ঞ একজন অভিনেত্রী হলেন তনুকা চ্যাটার্জী (Tanuka Chatterjee)। বাংলা সিরিয়ালের জগতে অত্যন্ত পরিচিত মুখ তিনি। এই মুহূর্তে তিনি একসাথে অভিনয় করছেন দু’দুটি সিরিয়ালে। যার মধ্যে অন্যতম হল স্টার জলসার ‘গাঁটছড়া’ (Gantchora)এবং কালার্স বাংলার ‘সোহাগ চাঁদ’। সদ্য এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর জীবনে ঘটে গিয়েছে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। চলতি বছরের মার্চ মাসেই নিজের স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি।
প্রিয়জন হারানোর শোক থেকে শুরু করে অভিনয় জীবন সবকিছু নিয়েই সম্প্রতি ইউটিউব চ্যানেল টলিউড ফোকাস কলকাতায় এক খোলামেলা আড্ডায় বসেছিলেলন অভিনেত্রী। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন অভিনেত্রী ১০ বছরের বড়, ৩২ বছরের সম্পর্ক। মা আর মেয়ের জন্য নিজের দুঃখটাকে ভিতরে সরিয়ে রাখবে। লাঞ্চের পরে আর ফোনটা আসবে না।
তার স্বামী তার থেকে ১০ বছরের বড় হলেও তারা ছিলেন একেবারে বন্ধুর মত মোট ৩২ বছরের সম্পর্ক ছিল তাদের তাই এক ঝটকায় এমন একটা প্রিয় মানুষ হঠাৎ করেই জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়ায় জীবনটা অভিনেত্রী চারপাশটা নাকি একেবারে ফাঁকা হয়ে গেছে। সেই অনুভূতি তিনি ভাষায় প্রকাশ করতে পারেননি কিন্তু আজও
কিন্তু আজও স্টুডিওতে বসেই প্রত্যেকদিন লাঞ্চ ব্রেকের পর ভুল করেই একটা ফোনের জন্য অপেক্ষায় থাকেন তিনি। তারপরেই মনে পড়ে যে সেই ফোন আর কোনদিন আসবে না। এদিনের সাক্ষাৎকারে তনুকা চ্যাটার্জি জানিয়েছেন স্বামী মারা যাওয়ার খবরটা তিনি সিরিয়ালের শুটিং ফ্লোর থেকেই অর্থাৎ স্টুডিওতে বসেই জানতে পেরেছিলেন। সেদিন দুপুরে শুটিং অসম্পূর্ণ রেখেই তিনি ছুটে গিয়েছিলেন বাড়িতে।
আসলে অভিনয় এমনই একটি পেশা, যেখানে কারো জীবনে যতই সমস্যা আসুক না কেন সব সময় মনে রাখতে হয় একটাই কথা তা হল ‘দ্য শো মাস্ট গো অন’। তাই স্বামী মারা যাওয়ার পর মাত্র একদিনের বিরতি নিয়েই শুটিংয়ে ফিরেছিলেন অভিনেত্রী। সেইসময় তার সেই বিপদে গোটা ইন্ডাস্ট্রি নাকি তার পাশে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
যার জন্য অভিনেত্রী তাঁর ইন্ডাস্ট্রির সমস্ত সহ অভিনেতা ও অভিনেত্রী থেকে শুরু করে সিনিয়র জুনিয়র প্রত্যেকের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। অভিনেত্রীর কথায় এটাও তাঁর অভিনয় জীবনের একটা প্রাপ্তি। দেখতে দেখতে ইন্ডাস্ট্রিতে ৩২ বছর পার করে ফেলেছেন তনুকা চ্যাটার্জী। দীর্ঘদিনের এই অভিনয় জীবনের শুরুতে তিনি সানিধ্যে এসেছেন বাংলা সিনেমার একাধিক কিংবদন্তি অভিনেতা অভিনেত্রীদের।
এদিন অভিনেত্রী জানিয়েছেন তিনি কমেডি চরিত্র করার অভিনয় শিখেছেন বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেতা রবি ঘোষের কাছে। অনুপ কুমার ছিলেন তাঁর মেসোমশাই। এছাড়াও বাংলা সিনেমার একাধিক দিকপাল সব অভিনেতা অভিনেত্রীদের সাথে কাজ করে সমৃদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। তাই নিজের সিনিয়রদের থেকে তিনি যেমন নিজে অভিনয় শিখেছিলেন তেমনি বর্তমান প্রজন্মের অভিনেতা অভিনেত্রীদেরও তিনি সেটাই দেয়ার চেষ্টা করেন।
অসময়ে স্বামীকে হারানোর পর চারপাশটা যেন শূন্য হয়ে গিয়েছে অভিনেত্রীর। তবে অত্যন্ত পজিটিভ মনের মানুষ তনুকা চ্যাটার্জি জানিয়েছেন যেহেতু তার মাথার ওপরে তার মা রয়েছেন আর রয়েছেন তাঁর একমাত্র মেয়ে তাই ওদের মুখের দিকে তাকিয়েই নাকি নিজের কষ্টটাকে অনেকটা ভেতরে সরিয়ে রাখেন অভিনেত্রী।