যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ের ফেস্টে কয়েক সপ্তাহ আগেই ঝড় তুলেছিলেন বাংলার বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী অনুপম রায়। সম্প্রতি এই যাদবপুরেই বাংলার গানের নব হিন্দোলে সাড়া ফেলে গিয়ছে দুই বিখ্যাত বাংলাদেশি ব্যান্ড জলের গান ও শিরোনামহীন। বাংলা গানেই মজেছিল গোটা তিলোত্তমা। যদিও তারপর পরেও বাংলা গান ও গায়কদের ‘দুরাবস্থার’ কথা তুলে ধরে গতকালই ক্ষোভ উগড়ে দেন সঙ্গীত শিল্পী রূপঙ্কর বাগচি। ক্ষোভ উগড়ে দিতে দেখা যায় বাংলার সঙ্গীতপ্রেমী শ্রোতাদের উদ্দেশ্যেও।
তবে যখন তিনি এ কথা বলছেন তখন নজরুল মঞ্চে শো মাতাচ্ছেন জনপ্রিয় বলিউডি গায়ক কৃষ্ণকুমার কুনাথ ওরফে কেকে। তখনই একটা ফেসবুক লাইভে এসে রূপঙ্করের দাবি ছিল, ‘আপনারা মুম্বইকে নিয়ে এত মাতামাতি করে যাচ্ছেন। দক্ষিণ ভারতকে দেখুন, পাঞ্জাবকে দেখে শিখুন, ওড়িশাকে দেখুন। বাঙালি হন। বাঙালি হন প্লিজ!’
এদিকে কাকতালীয় ভাবে রূপঙ্কর যে মুহূর্তে এ কথা বলছেন তাঁর কিছুক্ষণের মধ্যেই আচমকা মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন কেকে। নজরুল মঞ্চে প্রথমে শারীরিক অসুস্থতা শুরু হলে তাকে তৎক্ষণাৎ নিয়ে যাওয়া হয় কলকতারই একটি বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু, শেষ রক্ষ হয়নি। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃথ ভলে ঘোষণা করেন। এদিকে কেকে মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে গোটা বলিপাড়ায়। শোকে বিহ্বল নাগরিক মহলও।
শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের মতো রাষ্ট্রনেতারা। আর তারপরেই নেটিজেনদের চাঁচাছোলা আক্রমণের মুখে পড়েছেন রূপঙ্কর। তাঁদের অনেকের দাবি, কেকে-র মতো তারকা গায়কের সাফল্যের ঝলকানিতে ঈর্ষাণ্বিত হয়েই ফেসবুক লাইভে এসে ‘ভুল’ বকেছিলেন রূপঙ্কর। অনেকের আবার দাবি অবসাদের কারণেই নাকি কেকে-র প্রতি অজান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেলেছেন তিনি। অনেকে তো আবার এককাঠি এগিয়ে এও বলছেন রূপঙ্করের ‘অভিশাপেই’ মৃত্যু হয়েছে কেকে-র।
এদিকে বলি হোক বা টলি, শিল্পীতে শিল্পীতে টক্কর আজকের দিনে আর নতুন কিছু না। প্রকাশ্যেই চলে কাদা ছোঁড়াছুড়ি। এমনকী বাকযুদ্ধেও নামতে দেখা গিয়েছে একাধিক খ্যাতনামা তারকাকেও। যদিও রূপঙ্কের তোপ তেমনই একটা সাধারণ ঘটনা হয়ে থেকে যেতে পারত। কিন্তু, সব হিসেব ওলট-পালট করে দিল একটা মৃত্যু। আর এই মৃত্যু যে বলে কয়ে আসে না তা জানা সকলেই। কিন্তু, প্রিয় মানুষ চিরতরে হারিয়ে গেলে তার বেদনা ছাপিয়ে যায় সব কিছুকেই। সেখানে রূপঙ্করের এই জ্বলন্ত লাইভ যে শাপের করাঘাতের মতো নেমে এসেছে কেকে প্রেমীদের মনে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।