বাংলা সঙ্গীত (Music) দুনিয়ার এই উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন মনোময় ভট্টাচার্য (Manomoy Bhattacharya)। রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুলগীতি হোক বা সাম্প্রতিক সময়ের আধুনিক গান- সবেতেই স্বচ্ছন্দ তিনি। সেই ক্যাসেট, সিডির যুগে কেরিয়ার শুরু হয়েছিল তাঁর। এখন সময়টা হয়ে গিয়েছে ইউটিউবের। জীবনে একাধিক ঝড়ঝাপটা সামলে দেখতে দেখতে গায়ক (Singer) হিসেবে ইন্ডাস্ট্রিতে ২৫ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন তিনি।
যে কোনও গায়কের জন্যই এত বছর ইন্ডাস্ট্রিতে কাটিয়ে ফেলাটা অনেক বড় ব্যাপার। আর নামটা যখন ‘মনোময় ভট্টাচার্য’, তখন তো স্বাভাবিকভাবেই তা আরও বিশেষ হয়ে ওঠে। সম্প্রতি এই বিশেষ দিন উপলক্ষ্যেই গায়কের মুখোমুখি হয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। সেখানেই নিজের কেরিয়ার থেকে শুরু করে রিয়্যালিটি শো- সবকিছু নিয়ে মুখ খোলেন তিনি।
প্রথমেই মনোময়কে সঙ্গীত জীবনের ২৫ বছর উদযাপন নিয়ে জিজ্ঞেস করা হয়। এত বছর কেমন কাটল? সেই প্রশ্ন রাখা হয় তাঁর সামনে। উত্তরে তিনি বলেন, ‘ভালো খারাপ মিশিয়েই কেটেছে। কিন্তু আমার এই সফর যে বেশ মসৃণ ছিল তা কিন্তু নয়। প্রথম অ্যালবাম বেরনোর পরেই আমি সুপারহিট হয়ে গেলাম অথবা কোনও বিরাট প্রচার পেলাম- এমন কিছুই আমার সঙ্গে হয়নি’।
মনোময়ের কথায়, তিনি ইন্ডাস্ট্রিতে কোনও গডফাদার পাননি। অনেক সময় এমনও হয়েছে, তাঁর সমসাময়িক শিল্পীদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে অথচ তাঁকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ক্যাসেট কোম্পানির তরফ থেকে অন্যান্য শিল্পীদের প্রচার করা হতো। কিন্তু মনোময়ের সময়েই বলা হতো বাজেটের সমস্যা রয়েছে। কথার সূত্রেই মনোময় জানান, তিনি নচিকেতা চক্রবর্তীর গানের বিরাট ভক্ত। নিজে এত বড় গায়ক হলেও মনোময় লাইন দিয়ে প্রিয় ‘নচিদা’র ক্যাসেট কিনতেন।
সাক্ষাৎকারে রিয়্যালিটি শো প্রসঙ্গেও জিজ্ঞেস করা হয় মনোময়কে। এটাই উঠতি সঙ্গীতশিল্পীদের ভবিষ্যৎ কিনা সেই প্রশ্নও করা হয় তাঁকে। জবাবে ‘দিশাহীন’ গায়ক সাফ বলেন, ‘এটা (রিয়্যালিটি শো) ক্ষণিকের খ্যাতি পাওয়ার স্থান। এখন রিয়্যালিটি শো থেকে বেরিয়ে অনেকেই টাকা আয়ের জন্য ছোটে। সেই জন্য আসলে গানটা নড়বড়ে হয়ে যাচ্ছে। আমি কিন্তু তা বলে বলছি না যে প্রতিভা নেই, শুধুই এরা টাকার পিছনে ছুটছে। তবে এখন প্রত্যেকেই নাচের গান গাইতে চায়, সেই জন্য কোথাও গিয়ে নিজস্বতা হারিয়ে যাচ্ছে’।
মনোময়কে জিজ্ঞেস করা হয়, এখনকার রিয়্যালিটি শোয়ে অনেকসময় দেখা যায় প্রতিযোগীদের ব্যাপক প্রশংসা করছেন বিচারকরা। এটা কি পূর্বপরিকল্পিত? জবাবে গায়ক বলেন, ‘রিয়্যালিটি শোয়ে আসলে বিনোদনটাই সব। এই ধরণের শোগুলিতে বাছাই করা কিছু গান থাকে…। একটা শোকে সফল করার জন্য অনেক কিছুর দরকার। গানও আসলে এখন সিরিয়ালের মতোই হয়ে গিয়েছে! সেই গানকে সফল করার জন্য কনটেন্ট লাগে। যুগের সঙ্গে আসলে সব পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে’।