বলিউডের এমন অনেক কিংবদন্তি অভিনেতা আছেন, যাদের পাকিস্তানে জন্ম হলেও পরবর্তীতে তারা ভারতে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। টেলিভিশনের পর্দায় যাদের অভিনয়ের জগৎ জোড়া নাম। দেখে নিই সেই সকল কিংবদন্তিদের, বিনোদনের জগতে যাদের কালজয়ী অভিনয় পাকিস্তান এবং ভারতের সাপে- নেউলে সম্পর্ককেও হার মানায়।
রাজ কাপুর –
বলিউডের ‘শোম্যান’ রাজ কাপুর ১৯৪৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পেশোয়ারে। প্রায় ১০০ বছরের পুরনো এই প্রাসাদটি পেশোয়ারের ধুনকি মুনাওয়ার শাহে অবস্থিত। ভারতীয় সিনেমায় তাঁর অবদানের জন্য, ভারত সরকার তাঁকে ‘পদ্মভূষণ’ এবং ‘দাদাসাহেব ফালকে’ পুরষ্কারে ভূষিত করে।
সুনীল দত্ত –
বলিউড অভিনেতা সুনীল দত্ত ১৯২৯ সালের পাকিস্তানের পাঞ্জাবের জুন নক্কা খুরদ গ্রামে জন্ম নেন। পাকিস্তানের সীমান্ত পেরিয়ে এসে সুনীলের পরিবার কিছুকাল হরিয়ানায়, পরে লখনৌতে এবং শেষ পর্যন্ত বোম্বেতে স্থায়ী হয়।সুনীল দত্ত একটি রেডিও জকি হিসাবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তবে পরে তিনি চলচ্চিত্রের দিকে ঝোঁকেন। সুনীল দত্ত প্রমাণ করেছেন যে, তিনি অনেক মজার চরিত্রে অভিনয় করা একজন বহুমুখী অভিনেতা।
সুরেশ ওবেরয় –
বলিউডের অন্যতম কিংবদন্তি সুরেশ ওবেরয় 1946 সালের 17 ডিসেম্বর পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ভারত- পাকিস্থানের এক বছর পর তিনি হায়দ্রাবাদে স্থায়ী হন। সুরেশ প্রথমে রেডিও জকি কে তার পেশা হিসেবে বেছে নেন। পরবর্তীতে তিনি মডেলিং এবং ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
দেব অনন্দ –
হিন্দি চলচ্চিত্রের রোম্যান্টিক নায়কের শীর্ষে উঠে আসে দেব আনন্দের নাম। বলিউডের হার্ট থ্রব দেব আনন্দের জন্ম ১৯২৩ সালের ২ September সেপ্টেম্বর গুরুদাসপুরে (পাকিস্তানের নরোওয়ালা জেলা)। ভারত- পাকিস্তানের বিভাগের পর ভারতে এসে বম্বেতে বসতি স্থাপন করেন দেব আনন্দ। তিনি পেশা হিসেবে চলচ্চিত্র কে বেছে নেন এবং সময়ের স্রোতে বড় তারকা হয়ে ওঠেন। ভারতীয় সিনেমায় তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে পদ্মভূষণ এবং দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হয়।
দিলীপ কুমার –
‘ট্র্যাজেডি কিং ‘ দিলীপ কুমারের আসল নাম ইউসুফ খান। যার পৈতৃক বাড়ী পাকিস্তানের পেশোয়ারে। দিলীপ কুমারের পরিবার মুম্বাইতে এসেছিলেন 1930 সালে। দিলীপ কুমার অভিনয়ে ও উজ্জ্বল কাজের জন্য ‘দাদাসাহেব ফালকে’, ‘পদ্মভূষণ’ এবং ‘পদ্মবিভূষণ’ ভূষিত হয়েছেন।
বিনোদ খান্না –
বলিউড অভিনেতা বিনোদ খান্নার জন্ম 1946 সালের 6 অক্টোবর পাকিস্তানের পেশোয়ারে। দেশ বিভাগের পরে তার পরিবার স্থানান্তরিত হয় মুম্বাইতে। ছোটবেলা থেকেই তার সিনেমা দেখার শখ। এই শখ অবশেষে তাকে অভিনয়ের ক্ষেত্রে নিয়ে আসে।
অমরেশ পুরী –
চলচ্চিত্রের জগতে অন্যতম সেরা খলনায়ক আমরেশ পুরী। অভিনয়ের মাধ্যমে চরিত্রগুলিকে জীবিত করে তুলতেন তিনি। থিয়েটার এবং ফিল্মে নিজের ছাপ দেওয়ার পাশাপাশি বিদেশী মঞ্চেও তাঁর আলাদা পরিচয় ছিল। আমরিশ পুরী ১৯৩২ সালের ২২ জুন পাকিস্তানের লাহোরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
প্রেম চোপড়া –
কখনও কখনও বিপজ্জনক এবং কখনও কখনও মজার ভিলেনের অভিনয়ে হিন্দি ছবিতে প্রেম চোপড়ার কোনও বিকল্প নেই।
প্রেম চোপড়ার জন্ম পাকিস্তানের লাহোরে। প্রেম চোপড়া লাহোরে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করেছিলেন, এর পরে তিনি মুম্বাই এসে হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের সর্বকালজয়ী ভিলেন হয়েছিলেন।