আজকাল প্রযুক্তির পাশাপাশি বিজ্ঞানেরও অনেক উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে প্রথাগত চাষের (Farming) বদলে যদি জৈব বিজ্ঞান সম্মত উপায়েও কৃষি কাজ করা যায়। এমনকি প্রথাগত চাষের তুলনায় কম খরচে বেশি লাভ পাওয়া যায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে (Scientific Method) চাষ করলে। এই কথাই প্রমাণ করে দেখিয়েছেন অসমের এক মহিলা কৃষক দীপিকা রাভা (Deepika Rava)। দীপিকা অসমের (Assam) গোপালপাড়া জেলার পশ্চিম দাইরং গ্রামের বাসিন্দা। সেখানেই কৃষিকাজ করে জীবন নির্বাহ করেন তিনি।
তবে প্রথাগত চাষের বদলে তিনি নতুনত্ব প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে চাষাবাদ করেন। যার ফলে চাষে দারুন সাফল্য পেয়েছেন দীপিকা। যেমনটা জানা যায় দীপিকা মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন এরপর চাষাবাদের কাজে লেগে পড়েন। কিন্তু প্রথাগত চাষের ফলে খুব একটা লেভার মুখ দেখতে পাননি দীপিকা। এরপর নতুন বিজ্ঞান সম্মত চাষের জন্য প্রশিক্ষণ নেন তিনি। শুরু করেন আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ, এরফলে যেমন আগের থেকে অনেক কম খরচে চাষ ভালোভাবে সম্ভব হয় তেমনি লাভের পরিমাণও বেড়েছে আগের থেকে।
শুনলে হয়তো অবাক হবেন চাষবাস করেই আজ দীপিকার মত এক বিবাহিত মহিলার যায় লক্ষ লক্ষ টাকা। অবশ্য একদিনেই হয়ে যায়নি। প্রথমে দীপিকা ও তাঁর স্বামী মাইল পশুপালন শুরু করেন। প্রথমে শূকর পালন (Pig Farming) শুরু করেন তাঁরা। বিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতিতে শূকর চাষের সাহায্যে প্রথম বছরের মধ্যেই প্রায় ২০-৩০ টি শুকর বিক্রি করতে সক্ষম হন। এখনও পশুপালন করেন দীপিকা, বর্তমানে তাঁর কাছে প্রায় ৪০ টিরও বেশি শুকর রয়েছে যাঁরা বিক্রির জন্য প্রস্তুত।
এছাড়াও তিনি পেঁপে (Papaya) ও ধান (Rice) চাষ করেছেন। প্রায় ১২ বিঘা জমিতে জৈব জোহা ধানের বীজ বপন করে চাষ করেন তিনি। সাথে ৫ বিঘা জমিতে জৈব বীজের পেঁপে গাছ লাগান। এই দুই চাষের ক্ষেত্রেই আধুনিক পদ্ধতি ও বিজ্ঞান সম্মত উপায় মেনে চলেছে দীপিকা। যার ফলাফল স্বরূপ ধান বিক্রি করে মোট ২,৯৯,২০০ টাকা ও পেঁপে বিক্রি করে প্রায় ১,০০,০০০ টাকা আয় করেছেন তিনি। এছাড়াও জমিতে ভার্মি কম্পোস্ট তৈরী করে করেও বিক্রি করেন দীপিকা যার ফলে মোট ১,৭৫,০০০ টাকা লাভ হয়েছে।
অসমের দীপিকা রাভা বর্তমানে কৃষক হিসাবে বেশ পরিচিত। আধুনিক উপায়ে ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষের ফলে তিনি ভালো ফসল ও ভালো রোজগার পেয়েছেন। ২০১৮ সালে দীপিকাকে প্রগতিশীল কৃষক হওয়ার জন্য সম্মানিতও করা হয়েছিল।